মান্না দে-র সেই গানের মতো অবস্থা! আগন্তুক হয়ে এসে বামফ্রন্টকে জটিল অঙ্ক এক কষতে দিয়েছে কংগ্রেস!
কংগ্রেসের জন্য জায়গা ছেড়ে রেখেই বিধানসভা ভোটের জন্য প্রথম পর্যায়ের তালিকা প্রকাশ করেছে বামফ্রন্ট। কিন্তু এখন কংগ্রেসের চাহিদার সঙ্গে বাম শরিকদের আসনের দাবি মেলাতে গিয়ে প্রায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আলিমুদ্দিনকে! তৃণমূলকে হারাতে বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন, এই যুক্তিতে শরিকদের আত্মত্যাগে রাজি করাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। শরিকেরা অনেক ক্ষেত্রে রাজি হচ্ছে। কিন্তু তারা আবার পাল্টা দাবি করছে, কংগ্রেসের জন্য ত্যাগের কোটা না হয় সিপিএম পুষিয়ে দিক! এক দিকে নব্যবন্ধু কংগ্রেস, অন্য দিকে কয়েক দশকের সঙ্গী শরিক— কার মন কী ভাবে রাখা যাবে, জটিল অঙ্ক কষতে হচ্ছে আলিমুদ্দিনকে!
তিন বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই নেতৃত্বের সঙ্গে মঙ্গলবার সকাল থেকে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেছিলেন বিমানবাবুরা। সে আলোচনাতেই সব জট ছাড়েনি। সন্ধ্যার দিকে আবার আর এক দফা করে বৈঠক হবে। কিছু আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে শরিকেরা, কিছু আসন নিয়ে আবার প্রবল দর কষাকষি! যেমন, এ দিনের আলোচনায় আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী, মনোজ ভট্টাচার্যেরা তাঁদের কোটা থেকে বহরমপুর, রেজিনগর, বেলডাঙা ও কালীগঞ্জ আসন চারটি কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু নিজেদের বিধায়ক আছে যে কেন্দ্রে, সেই মালতীপুর তাঁরা দিতে নারাজ। সিপিআইয়ের প্রবোধ পণ্ডা, ম়ঞ্জুকুমার মজুমদারেরা সিপিএমকে জানিয়েছেন, তাঁদের কোটা থেকে কান্দি ও কালিম্পং তাঁরা ছেড়ে দিতে পারেন। কিন্তু শর্ত, বর্ধমান ও হুগলি জেলা থেকে দু’টি আসন বদলি হিসাবে দিতে হবে তাঁদের। চিন্তায় পড়েছেন বিমানবাবুরা!
ফ ব নেতৃত্বকে আবার সিপিএম বলেছে, তাঁরা যে ৩৪টি আসনে লড়াই করেন, তার মধ্যে গোটাসাতেক কংগ্রেস দাবি করছে! কয়েকটিতে নিমরাজি হলেও মুর্শিদাবাদ, রানিনগর ও জলপাইগুড়ির উপরে দখল ছাড়তে ফ ব নারাজ! যদিও তিনটি আসনেই এখন কংগ্রেসের বিধায়ক। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেছেন ফ ব নেতৃত্ব। রাতে আবার তাঁরা ফিরে যাবেন আলিমুদ্দিনে।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমাদের বামফ্রন্টেই ১১টি শরিক। তার সঙ্গে এ বার জেডিইউ, আরজেডি, এনসিপি, পিডিএসকে আসন দিতে হচ্ছে। এর উপরে আছে কংগ্রেস! এত সহজ নাকি রফা বার করা?’’