ধরপাকড়: ৯ মার্চ গ্রেফতার হচ্ছেন এসএফআই নেত্রী। ধর্মতলায়।ফাইল চিত্র।
রাত প্রায় সাড়ে ৮টা। আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে বন্দিদের ‘লক-আপ’ হয়ে গিয়েছে। জেলের অফিসের শৌচাগারের ঠিক পাশেই ‘সার্চিং রুম’-এ তখন দাঁড়িয়ে পাঁচ মহিলা। চার জন সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের কর্মী। অন্য জন এক মহিলা কারারক্ষী। তিনি চার সদ্য-আগত বন্দিকে নির্দেশ দিয়েছেন জামাকাপড় খুলে ফেলার। যা শুনে স্তম্ভিত তাঁরা! কিন্তু কারারক্ষী জানিয়ে দিয়েছেন, হুকুম তামিল করতে হবেই!
গত ১০ মার্চ এ ভাবেই এসএফআইয়ের চার মহিলা কর্মীকে বিবস্ত্র করে তল্লাশির অভিযোগ উঠেছে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এসএফআইয়ের তরফে রাজ্য মহিলা কমিশনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। এ কথা যদি সত্যি হয়, আমি মর্মাহত! এখন তো শরীরের তল্লাশি করতে নানা প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। এমন আদিম প্রক্রিয়ায় তল্লাশির কী প্রয়োজন!’’
আরও পড়ুন: সঞ্জয়ের স্ত্রীকে সরকারি চাকরি
টেট-দুর্নীতির প্রতিবাদ মিছিলে ধৃত সিপিএমের ১২৩ জন যুব ও ছাত্র-কর্মীর মধ্যে ৮ জনের জেল হেফাজত হয়েছিল। এর মধ্যেই ছিলেন এসএফআইয়ের চার মহিলা। তাঁদেরই এক জন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘জেলের ভিতরে যাওয়ার আগে বন্ধ ঘরে এক জন মহিলা জেলকর্মী তিন জনের পোশাক খুলে শুধু নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস পরিয়ে রেখে দেহে তল্লাশি করেন। অন্য জন রজঃস্বলা ছিলেন। সেটা জেনে বিশ্রী ইঙ্গিত করে তাঁকে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলতেও বাধ্য করা হয়।’’ জেল হেফাজতে ছিলেন এসএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেনরায়ও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘জামিনে ১৪ মার্চ বেরনোর সময়ে বিবস্ত্র করে না হলেও সব্বার সামনে অশ্লীল ভাবে তল্লাশি হয়েছে।’’
বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘৃণ্য ঘটনার সুবিচার পেতে আইনি পরামর্শ নিচ্ছি।’’ জামিনে ছাড়া পেয়ে পাল্টা মামলার প্রস্তুতির জন্যই এসএফআই কর্মীরা আগে বাইরে মুখ খোলেননি। দলের পরামর্শে মধুজারা জেলের অভিজ্ঞতার বিবরণ লিপিবদ্ধ করছেন। যা শীঘ্রই প্রকাশ্যে আসবে।