ছবি: সংগৃহীত।
গুলি করে মারার হুমকি দেওয়ায় রাজ্যের বিভিন্ন থানায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো শুরু হল। গুলির হুমকির জেরে দলে নিন্দিত হয়েছেন সোমবারই। বিজেপি সূত্রের খবর, এ দিন অমিত শাহের নির্দেশে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও দিলীপকে সতর্ক করেছেন। এ নিয়ে অবশ্য রাত পর্যন্ত দিলীপের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
গত রবিবার দিলীপ যেখানে ওই কথা বলেছিলেন, নদিয়ার সেই রানাঘাট থানায় সোমবার রাতেই অভিযোগ জমা পড়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানাতেও দিলীপের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন তৃণমূলের এক নেতা। কলকাতার বৌবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ শাদাব খান। সিপিএমের রানাঘাট এরিয়া কমিটির সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তীও এ দিন এফআইআর দায়ের করেন। দিলীপের অবশ্য ভ্রুক্ষেপ নেই। তিনি উল্টে বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে এফআইআর অজস্র হয়েছে। তাতে কি বিজেপিকে আটকানো গিয়েছে?’’
রবিবার সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “পাঁচশো-ছ’শো কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। এই রাজ্যে গুলি-লাঠি চলেনি। কিন্তু অসম, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশে শয়তানদের গুলি করা হয়েছে। এখানে আসবে, থাকবে, খাবে আবার সরকারি সম্পত্তি ক্ষতি করবে! লাঠি মারব, গুলি করব, জেলে পাঠাব।’’
আরও পড়ুন: লগ্নি-তদন্তে প্রাক্তন ইডি অফিসারই এ বার প্রশ্নের মুখে
রানাঘাট থানায় এফআইআর করে তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ যে ভাবে হুমকি আর উস্কানি দিয়েছেন, যে কোনও সময়ে বড় কিছু ঘটে যেতে পারে।’’ রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। তা শেষ হলে প্রয়োজনে পদক্ষেপ করা হবে।’’ দিলীপের এই হুঙ্কারে অবশ্য চাপে পড়ে গিয়েছে তাঁর নিজের দলই। কেননা, অসম বা উত্তরপ্রদেশ সরকার কখনও প্রকাশ্যে বলেনি যে সম্পত্তি ধ্বংসে যুক্ত থাকা কাউকে তারা গুলি করে মেরেছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, দিলীপ কি আসলে ‘গোপন কথা ফাঁস’ করে দিলেন? অসমে ছাত্র সংগঠন আসু ইতিমধ্যে বিজেপির ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করেছে। বাবুল সুপ্রিয় টুইটারে দাবি করেছেন, দিলীপের এই কথার সঙ্গে দল হিসাবে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।
দিলীপ তবু দুঃখপ্রকাশের রাস্তায় হাঁটেননি। বরং তিনি দাবি করেন, ‘‘অজস্র মারধর, হুমকি, মিথ্যে মামলা সত্ত্বেও লোকসভায় আমরা ১৮টি আসন জিতেছি। তৃণমূলের রাজনীতি দেউলিয়া। তাই তারা পুলিশকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী স্বর রোধ করার চেষ্টা করছে। আর কংগ্রেস চাইছে প্রচারের আলোয় আসতে।’’