বিশ্বভারতী। ফাইল চিত্র।
তাঁর জীবদ্দশায় যে জন্মদিন পালনের সূচনা হয়েছিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পরেও এতগুলো বছরে তাতে ছেদ পড়েনি। করোনা সংক্রমণের কাঁটা এ বার বদলে দিল শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের চেনা ছবিটা। কিন্তু, এই ‘জরুরি’ অবস্থাতেও বিতর্ক পিছু ছাড়ল না বিশ্বভারতীর।
লকডাউন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠান বা জমায়েত করার কোনও উপায় নেই। আশ্রমিকদের একাংশ আগেই বলেছিলেন, রবীন্দ্রজয়ন্তীতে প্রতীকী অনুষ্ঠান কিছু করা যায় কিনা, তা উপাচার্যের সিদ্ধান্ত। সেই প্রতীকী অনুষ্ঠান ঘিরেই বিতর্ক বেধেছে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বিধি না মেনে কাচ মন্দিরে জমায়েত করার অভিযোগ তুলেছেন অধ্যাপকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, প্রায় ষাট জন অধ্যাপক ও আধিকারিকের একটি দল নিয়ে শুক্রবার সকালে উপাসনায় বসেন উপাচার্য। তার পরে উদয়ন বাড়িতে কবিগুরুর ব্যবহৃত বসার আসনে তিনি ফুল দেন। সবশেষে ছাতিমতলায় ফুল দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি।
অভিযোগ, এই অনুষ্ঠান সারা হয়েছে গোপনীয়তা বজায় রেখে। আশ্রমিক ও অধ্যাপকদের বড় অংশই খবর পাননি। অনুষ্ঠানে হাজির থাকা এক অধ্যাপকের দাবি, ‘‘গোটাটাই হয়েছে পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি না মেনে। ফুল দেওয়ার আগে বা পরে হাত স্যানিটাইজ় করার কোনও ব্যবস্থাও ছিল না।’’ এসডিপিও (বোলপুর) অভিষেক রায় বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর এই জমায়েত প্রসঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনকে জানানো হয়নি।’’
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: ১ শতাংশেই কি সব হিসেব গোলমাল
নেটযুদ্ধেই অস্ত্র শানাচ্ছে বিজেপি, তৈরি তৃণমূলও
শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির জন্য আজ আমরা কেউই রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করতে যেতে পারিনি। এই পরিস্থিতিতে উপাচার্য কেন আলাদা করে পালন করতে গেলেন, আমি জানি না। এ ভাবে নিঃশব্দে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালন করাটা ঠিক হয়নি, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সুষ্ঠু ভাবে করলেই ভাল হত।’’
অধ্যাপক ও প্রাক্তনীদের একাংশের ক্ষোভ, ‘‘বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাঁর জন্মদিনে বিশ্বভারতী শ্রদ্ধা নিবেদন করবে, তা স্বাভাবিক। কিন্তু, যে সঙ্কটের মুখে গোটা বিশ্ব দাঁড়িয়ে, সেখানে গোপনে এত জনের জমায়েত করার প্রয়োজন ছিল না।’’ অভিযোগ প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)