Migratory Labourer

পরিযায়ীদের থেকে টাকা আদায়,  নালিশ রেল পুলিশের বিরুদ্ধে

রবিবার খড়্গপুর স্টেশনে পৌঁছনো যশবন্তপুর-হাওড়া এবং উদয়পুর-শালিমার স্পেশাল এক্সপ্রেসের একাংশ যাত্রীই মূলত এই অভিযোগ তুলেছেন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ০৫:৪৩
Share:

খড়্গপুর স্টেশনে পরিযায়ীরা। নিজস্ব চিত্র।

বিভিন্ন রাজ্যে চলছে লকডাউন। রবিবার থেকে এ রাজ্যেও বাড়ানো হয়েছে বিধি-নিষেধ। এই পরিস্থিতিতে ভিন্‌ রাজ্য থেকে দল বেঁধে পরিযায়ীরা বাড়ি ফিরছেন। দূরপাল্লার ট্রেন স্টেশনে পৌঁছতেই পরিযায়ীদের করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে রাজ্যের উদ্যোগে। বিধি-নিষেধের কড়াকড়ির প্রথম দিনেই খড়্গপুর স্টেশনে এক দল পরিযায়ীকে নিভৃতাবাসে পাঠানোর হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠল রেল পুলিশের বিরুদ্ধে।

Advertisement

রবিবার খড়্গপুর স্টেশনে পৌঁছনো যশবন্তপুর-হাওড়া এবং উদয়পুর-শালিমার স্পেশাল এক্সপ্রেসের একাংশ যাত্রীই মূলত এই অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। অভিযোগ, রেল পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারেরা টাকা আদায় করছেন। অদূরে রেল পুলিশের এক আধিকারিকের উপস্থিতিতেই সব হচ্ছে। বিষয়টি জেনে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন আধিকারিকেরা।

রাজ্যের নির্দেশিকা মেনে খড়্গপুর স্টেশন চত্বরে বোগদার দিকে দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীদের জন্য করোনা পরীক্ষার শিবির করেছে জেলা প্রশাসন। লাইন করে ভিনরাজ্য-ফেরতদের সেখানে পাঠাচ্ছে রেল পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়াররা। এ দিনও একই ভাবে যশবন্তপুর ও উদয়পুর থেকে আসা দু’টি দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীরা নামার পরে চলছিল করোনা পরীক্ষার কাজ। লাইন দেখভালের সময়ই একাধিক পরিযায়ী শ্রমিকের কাছে নানা অজুহাতে টাকা দাবি করা হয় বলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ।

Advertisement

যাত্রীদের আরও দাবি, টাকা না দিলে নিভৃতাবাসে পাঠিয়ে দেবে বলে হুমকি দেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা।
যশবন্তপুর স্পেশালে খড়্গপুরে পৌঁছনো গোপীবল্লভপুরের ফেকোর বাসিন্দা অমিত বেরা বলেন, “বেঙ্গালুরুতে শ্রমিকের কাজ করতাম। লকডাউনে বাড়ি ফিরছি। বেতনও পাইনি। সামান্য যে টাকা ছিল তা নিয়েই ট্রেনে উঠেছিলাম। খড়্গপুরে নামার পরে কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারেরা এক হাজার টাকা চায়। টাকা না দিলে কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানোর হুমকি দেয়। যা টাকা ছিল দিয়ে দিয়েছি।”

এ দিন সকালে উদয়পুর-শালিমার স্পেশালে স্ত্রী দীপা বাগকে নিয়ে খড়্গপুর পৌঁছন বর্ধমানের শুভম বাগ। তিনিও বলেন, “আমি রাজস্থানে কাজ করি। ট্রেনে ওঠার পরে জানতে পারি এখানেও কার্যত লকডাউন শুরু হয়েছে। বাস পাইনি। বর্ধমান যেতে গাড়ি ভাড়া ৭ হাজার চাইছে। তার উপরে স্টেশনে পৌঁছনোর পরে আমার কাছে আধার কার্ডের প্রত্যয়িত কপি আছে বলে সিভিক ভলান্টিয়ার এক হাজার টাকা নিয়েছে।”

কাজ ছেড়ে পরিবার নিয়ে রাজ্যে ফিরে এমনিতেই চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। বাড়ি পৌঁছতে মোটা টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করতে হচ্ছে। তার উপরে রেল পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারদের এমন জুলুমের মুখে পড়ে তাঁরা ক্ষুব্ধ। এমন অভিযোগে অস্বস্তিতে রেল পুলিশের আধিকারিকেরাও। রেল পুলিশের ডেপুটি সুপার শেখর রায় বলেন, “আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে সেই যাত্রীদের তো আমরা আর পাইনি। কিন্তু যে দু’টি ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। সেই সময়ে আমাদের কারা কর্তব্যরত ছিলেন, তা দেখে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে চরমতম শাস্তি হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement