ফাইল চিত্র।
দামোদরের নাব্যতা বাড়াতে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেড’-এর কাছ থেকে বালির চরে ‘ড্রেজ়িং’ করার কাজের বরাত পেয়েছে এক বেসরকারি ঠিকা সংস্থা। কিন্তু সংস্থাটি ‘তোলা’ দিতে না চাওয়ায় কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল এলাকায় তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত এক ব্যক্তি-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুরে সহদেব লায়েক নামে ওই নেতা-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগকরেছে সংস্থাটি।
কলকাতার ওই সংস্থা সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম বর্ধমানের ডামরা, ভূতনাথ ও কালাঝরিয়ার চরে ড্রেজ়িং করার কাজ পেয়েছে তারা। সংস্থার ম্যানেজার (ব্যবসা) অনু শর্মার অভিযোগ, “কয়েক দিন ধরে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই এক দল লোক তোলা চাইছেন। তা না দেওয়ায় আমাদের লোকজনকে মারধর করা হচ্ছে। আমাদের যন্ত্র একটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে রেখেদেওয়া হয়েছে।”
অভিযুক্ত সহদেবের অবশ্য দাবি, “অন্য কেউ তোলা চেয়ে থাকতে পারে। আমরা চাইনি। কাজও বন্ধ করিনি। মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।” তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, বালি বোঝাই ভারী ডাম্পার যাতায়াত করায় রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। সংস্থাটিকে রাস্তা মেরামতের কথা বলেও লাভ হচ্ছে না। যদিও তা অস্বীকার অনুর দাবি, রাস্তা সংস্কারে মোটা টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দ্রুত সে কাজ শুরু করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “তোলাবাজির জন্য রাজ্যে উন্নয়নের কাজ যে আটকে যায়, এই ঘটনা তার প্রমাণ।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “এ বিষয়ে আমার কাছে কোনও খবর নেই। তবে অভিযোগ যখন হয়েছে, পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।”
সংস্থাটির সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের বন্যা পরিস্থিতি রোধ ও দামোদরের গতিপথ স্বাভাবিক রাখতে ড্রেজ়িং করা জরুরি।
ওই এলাকায় কয়েকটি জলপ্রকল্পের পাম্প এবং পাইপলাইন বসানো আছে। ফলে, ড্রেজ়িং বন্ধ হলে এবং এর পরে ভারী বৃষ্টিতে দামোদর ফুলে-ফেঁপে উঠলে পাম্প ও জলের পাইপলাইনের ক্ষতি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জল সরবরাহেও বিঘ্ন ঘটতে পারে। পুলিশ জানায়, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।