ক্যাপ- ইয়াস কেড়েছে সর্বস্ব। ফের ঘর বাঁধার তোড়জোড় দিঘায়। নিজস্ব চিত্র
ঝড়-ঝঞ্ঝার দু’দিন পরেও সে ভাবে রোদের মুখ দেখল না সৈকত শহর। চার দিকে এখনও ধ্বংসস্তূপ। ইয়াস-বিধ্বস্ত দিঘায় শুক্রবার এসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রূপসী দিঘার হারানো চেহারাটা ফিরিয়ে দেওয়াই যে তাঁর লক্ষ্য, এ দিন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেলে নিউ দিঘার ‘জাহাজ বাড়ি’তে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে, নতুন ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বানিয়ে দিঘায় পুনর্গঠনের কাজ হবে। সন্ধ্যায় জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত দিঘা কিছুটা ঘুরেও দেখেন মমতা। তবে ঢেউয়ের দাপটে গার্ডওয়ালের বিশালাকার বোল্ডার যে ভাবে সৈকতে এনে ফেলেছে, তা পেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বেশি দূর এগোতে পারেননি।
হতশ্রী দিঘার শ্রী ফেরাতে আপাতত দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের মাথায় মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বসিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদে’র (ডিএসডিএ) মূল প্রশাসনিক ভবনে পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিঘায় একটা বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের কোনও চেয়ারম্যান নেই। নতুন করে করা হবে পরে। আমি আপাতত মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডিএসডিএ-র দায়িত্ব দিচ্ছি।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘দিঘার জন্য নতুন পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। সেটা করতে গেলে মাথায় গুরুত্বপূর্ণ লোকের দরকার। আলাপনকে আমি দায়িত্ব দিচ্ছি। এটা আলাপন ছাড়া হবে না।’’ এ দিন মুখ্যসচিব বৈঠকে বলেন, ‘‘পরিবেশ বান্ধব পরিকল্পনা করতে হবে।
দিঘায় ঝাউ গাছ কী ভাবে লাগানো যায়, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। তাদের পরামর্শ মেনেই সব করা হবে।’’ যদিও শুক্রবার রাতেই কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ দিয়ে আলাপনকে কেন্দ্রে ডেপুটেশনে যেতে বলেছে।
এ দিন দিঘার পর্যালোচনা বৈঠকেও সেচ দফতরের কড়া সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে ক্ষতিপূরণ বিলিতে যাতে কোনও দুর্নীতি না হয়, সে জন্য সরকারি আধিকারিকের সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আজ, শনিবার সকালে আকাশপথে নন্দীগ্রাম, খেজুরি-সহ উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিনও সকালে জোয়ার চলাকালীন জলোচ্ছ্বাস হয়েছে ওল্ড দিঘায়। গার্ডওয়াল টপকে সৈকতে আছড়ে পড়েছে ঢেউ। তারই মধ্যে শুরু হয়েছে পুনর্গঠনের কাজ। ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তার, উপড়ে পড়া খুঁটি মেরামত চলছে। ওল্ড দিঘায় ১১৬ বি জাতীয় সড়কের ভাঙা অংশেও কাজ চলছে।