ক্যানিং বঙ্কিম সর্দার কলেজ। ছবি সংগৃহীত।
এত দিন মূলত ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রযুক্তি পাঠের কলেজগুলিতেই পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে সরাসরি পেশা-প্রবেশের সুলুকসন্ধান দেওয়া হত। এ বার বেশ কিছু ডিগ্রি কলেজও ক্লাসঘরের পঠনপাঠনের পাশাপাশি পড়ুয়াদের পেশার সন্ধান দিতে এবং তাঁদের পেশাগত জীবনের জন্য যোগ্য করে তোলার ব্যবস্থা করছে।
শিল্প ক্ষেত্রের নামী সংস্থার সহায়তায় প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ থেকে শুরু করে এই বিষয়ে অভিজ্ঞদের দিয়ে আলোচনাসভার আয়োজন করছে বিভিন্ন কলেজ। কয়েক মাস আগে সুন্দরবন অঞ্চলের ক্যানিং বঙ্কিম সর্দার কলেজ এবং কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজ ফর উইমেন যৌথ ভাবে এক আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল। তাতে বক্তা হিসেবে এসেছিলেন টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) এবং বণিকসভার প্রতিনিধিরা।
তার পরে বঙ্কিম সর্দার কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক হওয়া পড়ুয়াদের কর্মজীবনে প্রবেশ করিয়ে দিতে উদ্যোগী হন। টিসিএসের সঙ্গে ‘মউ’ বা সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেন তাঁরা। পড়ুয়াদের আলাদা আলাদা ব্যাচে ১০০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে টিসিএস। কলেজের অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায় জানান, ৪৩ জন পড়ুয়া প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সকলেই যে উচ্চ মেধার পড়ুয়া, তা নয়। কলেজের এমপ্লয়মেন্ট সেলে যুক্ত শিক্ষকেরা প্রায় বাড়ি থেকে তাঁদের ডেকে এনে প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে সম্প্রতি ছ’জন বিভিন্ন সংস্থায় ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ইতিমধ্যে চার জন চাকরিও পেয়ে গিয়েছেন।
সুরেন্দ্রনাথ কলেজ ফর উইমেনের অধ্যক্ষা পূর্ণিমা বিশ্বাস জানান, মে মাসের ওয়ার্কশপের পরে এ বার তাঁরা পড়ুয়াদের পেশা-জগতের সঙ্গে আরও পরিচিত করাতে চাইছেন। তাঁদের তিন প্রাক্তন ছাত্রী ‘স্টার্টআপ’ তৈরি করেছেন। ওই তিন জন অভিজ্ঞতার কথা জানাবেন অন্য ছাত্রীদের।
ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (নাক)-এর মূল্যায়নে ভাল ফল করার জন্য অনেক কলেজই প্লেসমেন্ট সেল তৈরি করছে। সেই সেলকে আরও সক্রিয় করা দরকার বলে মনে করছে বেশ কিছু কলেজ। আসানসোলের বনোয়ারিলাল ভালোটিয়া কলেজে কেরিয়ার কাউন্সেলিং এবং প্লেসমেন্ট সেল তৈরি হয়েছিল আগেই। তার সঙ্গে সম্প্রতি তৈরি করা হয়েছে একটি ‘এন্টারপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট সেল’। কলেজের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক এবং এই সেলের বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত শান্তনু মল্লিক বলেন, ‘‘সফল উদ্যোক্তা হওয়ার প্রশিক্ষণ দিতেই গড়া হয়েছে এই সেল। এর আগে পড়ুয়াদের ‘সফট স্কিল’ বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা হয়েছে। পাঠ শেষে পেশাদার জগতের সঙ্গে যাতে তাঁরা মানানসই হয়ে উঠতে পারেন, সেই বিষয়েও উদ্যোগ চলছে।’’ শিল্প নিয়ে যাতে পড়ুয়াদের উৎসাহ বাড়ে, এই সেল সমান ভাবে সেই চেষ্টাও চালাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।