নুরজামালের বাড়িতে ওলিদ (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
দুর্ঘটনায় জখম বৃদ্ধকে উদ্ধার করতে গিয়ে কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় বসা হয়নি। সেই খবর সামনে আসতেই পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশন (সিএসসি) থেকে ফোন পেলেন কাঁথির শ্রীরামপুরের যুবক ওলিদ আলি। তাঁর পরীক্ষা কেন্দ্র পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ থেকেও ওলিদ-কে জানানো হয়েছে, তাঁকে সিএসসি-র দফতরে দেখা করতে হবে।
মঙ্গলবার সকালে সিএসসি এবং বনমালী কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে ফোন পান ওলিদ। তিনি বলেন, ‘‘সিএসসি থেকে ফোন করে ২৭ জানুয়ারি ডেকে পাঠিয়েছে। বনমালী কলেজের অধ্যক্ষও ফোনে জানান, সিএসসি-তে দেখা করতে হবে। ২৭ তারিখেই যাব।’’ সিএসসি-র চেয়ারম্যান দীপক কর মানছেন, ‘‘ওলিদকে ডেকে পাঠিয়েছি। এমন একটা কাজ করেছেন, উৎসাহ দিতে চাই। পরের বারের পরীক্ষার জন্য শুভেচ্ছাও জানাচ্ছি।’’ বনমালী কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনার রিপোর্টও চেয়েছেন চেয়ারম্যান। গত রবিবার ‘সেট’ পরীক্ষা দিতে বনমালী কলেজে যাচ্ছিলেন ওলিদ। মেচেদায় দুর্ঘটনায় আহত এক বৃদ্ধের শুশ্রূষায় খানিকটা সময় চলে যায় তাঁর। দেরিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোয় নিয়ম মতো তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি।
যাঁকে বাঁচাতে গিয়ে ওলিদের পরীক্ষা দেওয়া হয়নি, সেই শেখ নুরজামাল নার্সিংহোম থেকে কাঁথির উত্তরডিহি মুকন্দপুরের বাড়িতে ফিরেছেন। শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ওলিদের পরীক্ষা দিতে না পারার কথা জানতে পরে অনুতপ্ত ৬৮ বছরের ওই বৃদ্ধ। স্ত্রী, দুই ছেলে, পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনি নিয়ে নুরজামালের সংসার। বৃদ্ধের বড় নাতি শেখ জাকিরের জন্য ১৫ দিন অন্তর মেচেদা থেকে ওষুধ আনতে যান নুরজামাল। গত রবিবার সেই ওষুধ আনতে গিয়েই বিপত্তি।
আরও পড়ুন: সিএএ বাতিল করুন, সুপ্রিম কোর্টে চিঠি নাখোদা-সদস্যের
ওলিদ যখন এসেছিলেন, তাঁর হাত দু’খানি ধরে বৃদ্ধ বলেছেন, ‘‘তুমি আমার আর এক ছেলে। না হলে কেউ নিজের ক্ষতি করে সাহায্য করে!’’
আরও পড়ুন: বাতিস্তম্ভ ভেঙে শিশু-মৃত্যুতে ফুঁসছে এলাকা