বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনা হাই কোর্টের
কারও ইচ্ছার বিরুদ্ধে দান বা অনুদান নয়। দান গ্রহণ করা উচিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ইচ্ছা অনুসারেই। মঙ্গলবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত এক রায়ে এমনই জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা জানান, দান বা অনুদান কখনই কারও ইচ্ছা-অনিচ্ছা বা মতামত ছাড়া নেওয়া হতে পারে না। উদ্দেশ্য ভাল হলেও লক্ষ্যে পৌঁছতে একতরফা ভাবে এ নিয়ে কখনওই জোর করা যায় না। তা ছাড়া অনুদানের নামে কারও আইনি অধিকারও কেড়ে নেওয়া উচিত নয়।
ঘূর্ণিঝড় আমপানে সাহায্যের কারণে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থদানের হেতু গত বছর একটি নির্দেশ জারি করেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। নির্দেশে বলা হয়েছিল, বাধ্যতামূলক ভাবে সমস্ত অধ্যাপককে এক দিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে জমা দিতে হবে। কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন সুদীপ্ত ভট্টাচার্য নামে এক অধ্যাপক। তাঁর বক্তব্য, ইচ্ছা-অনিচ্ছার তোয়াক্কা না করেই জোর করে বেতন কেটে নিয়েছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মামলাকারীর ওই আর্জিতে সায় দেন বিচারপতি সিনহা। তিনি জানান, দানের জন্য জোর করে বেতন কাটা যায় না। তা ছাড়া, একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতীর রাবীন্দ্রিক সংস্কৃতি ও কবিগুরুর ঐতিহ্যের পরিপন্থী। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তিনি ভর্ৎসনাও করেন। যদিও ওই কেটে নেওয়া অর্থ মামলাকারীকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি উচ্চ আদালত। আদালতের যুক্তি, যে হেতু টাকা ত্রাণ তহবিলে জমা পড়ে গিয়েছে, তাই সেখান থেকে তা ফেরত নিয়ে আসা যায় না। ফলে বেআইনি হলেও গ্রহীতা ওই অর্থ ফেরত পাবেন না।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার রায় দিতে গিয়ে দান- অনুদানের মধ্যে পার্থক্য করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন বিচারপতি সিনহা। তিনি নির্ধারণ করতে চেয়েছিলেন, দান এবং অনুদানের মধ্যে কোনটি স্বেচ্ছায় নেওয়া হয়। এর জন্য তিনি দু’টি অভিধানের সাহায্য নেন। দু'টি ক্ষেত্রেই বিচারপতি একই অর্থ খুঁজে পান।