রাস্তায় পড়ে গুলিবিদ্ধ জগন্নাথ মণ্ডল। (ডান দিকে) অপারেশন থিয়েটারের পথে জগন্নাথ মণ্ডল। ছবি: এবিপি আনন্দের সৌজন্যে, ফাইল চিত্র
বুধবার সারা রাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল হতেই স্নান-খাওয়া সেরে থানায় এসেছিলেন জগন্নাথ মণ্ডল। থানায় বসেই ‘দুঃসংবাদ’ পেলেন দুপুরে! এক সহকর্মীর কাছ থেকে কসবা থানার অতিরিক্ত ওসি জগন্নাথবাবু শুনলেন, তাঁকে গুলি করার অভিযোগে ধৃতেরা সবাই বেকসুর ছাড়া পেয়েছে।
চার বছর আগে পুরভোটের বিকেলের ঘটনা। গিরিশ পার্ক থানার তৎকালীন সাব-ইনস্পেক্টর জগন্নাথ মণ্ডল গোলমাল থামাতে গিয়েছিলেন। তখনই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। সেই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল কলকাতায়। তিন মাস পরে ফের কাজে যোগ দেন তিনি। তার পর গঙ্গা দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। পদোন্নতি পেয়ে তিনি ইনস্পেক্টর হয়েছেন। চার দিন পরেই অবসর নেবেন জগন্নাথবাবু।
পুলিশ সূত্রের খবর, মানসিক ভাবে চাপে থাকলেও কাজে জগন্নাথবাবু নিয়মনিষ্ঠ। সকালে এলাকায় রুটিন টহলদারিও করেছেন। তার পর থানায় ফিরে নিজের ঘরেই ছিলেন। লালবাজারের অনেকেই বলছেন, ভোটের ডিউটিতে গিয়ে গুলি খেলেও মনোবল হারাননি এই প্রবীণ অফিসার। গত বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটেও ডিউটি করেছেন। তবে এ দিন রায় শোনার পর থেকে কিছুটা বিমর্ষ দেখিয়েছে তাঁকে। দুপুরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন বটে। তবে সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের ডিউটি, ব্যক্তিগত অনুভূতি নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। সূত্রের খবর, রায় শুনে হতাশ জগন্নাথবাবুর পরিবারও।
পুলিশের খবর, বাকি তিনটে দিনও নিজের কাজ দায়িত্ব সহকারে করার কথা জানিয়েছেন জগন্নাখবাবু এবং আপাতত তাঁর লক্ষ্য নিরুপদ্রব অবসর জীবন। এ দিন রাতে জগন্নাথবাবুর এক সহকর্মী আক্ষেপ করেন, ‘‘এত দায়িত্ব নিয়ে আজীবন চাকরি করেও শেষমেশ সুবিচার পেলেন না স্যর!’’