ছবি এএফপি।
আসি-আসি করেও যেন আসছিল না সে। তবে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পেরিয়ে বঙ্গে হানা দিয়ে কার্যত ধুন্ধুমার ব্যাটিং শুরু করেছে শীত। এতটাই যে, জেগে উঠছে আট বছর আগের এক দিনের শীত-স্মৃতি!
কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর। আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, আট বছর পরে আজ, শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আবার ১০ ডিগ্রিতে নামতে পারে। কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের বেশির ভাগ জেলায় শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। সাধারণত, রাতের তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রি বা তার নীচে নেমে যায় এবং স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রার থেকে তা যদি অন্তত পাঁচ ডিগ্রি কম হয়, সেটাকে বলা হয় শৈত্যপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার শ্রীনিকেতনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (৭.৮ ডিগ্রি) ছিল স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি নীচে। অর্থাৎ শৈত্যপ্রবাহ হয়েছে। উত্তরবঙ্গে কুয়াশার জন্য দিনের তাপমাত্রা অনেক কম থাকতে পারে। হাওয়া অফিসের খাতায় যাকে বলা হয় ‘শীতল দিন’।
কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলছেন, ‘‘পশ্চিমি ঝঞ্ঝার বাধা কেটে যাওয়ায় কনকনে উত্তুরে হাওয়া বাধাহীন ভাবে বয়ে আসছে। তার ফলেই পারদের এই দ্রুত পতন।’’ আবহাওয়া দফতরের খবর, বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রির কাছাকাছি। সেখান থেকে এ দিন এক ধাক্কায় মহানগরীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে হয় ১১.৭ ডিগ্রি। জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে পুরুলিয়া-সহ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে। বড়দিনের আগে এমন ঠান্ডা পেয়ে আমোদিত বাঙালি। সকাল থেকেই রাস্তায়, ট্রেনে, বাসে শীত নিয়ে চর্চা। চোখে পড়ছে রংবাহারি সোয়েটার, মাফলার, টুপির মেলা। মেলা ভিড় ভিক্টোরিয়া, ময়দান, ইকো পার্কে।
আরও পড়ুন: অশান্তিতে হতাহত নেই হাইকোর্টে জানাল রাজ্য
হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, ডিসেম্বরের শেষে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়া অস্বাভাবিক নয়। তবে ২০১২ সালের পরে কলকাতায় ডিসেম্বরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিতে পৌঁছয়নি। গত বছর ২৯ ডিসেম্বর কলকাতার রাতের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ১০.৮ ডিগ্রিতে। অঙ্কের সূক্ষ্মতা বাদ দিয়ে সেটাকে ১১ ডিগ্রি হিসেবেই বিচার করেন আবহবিজ্ঞানীরা। আবহাওয়া দফতরের নথি বলছে, বছরের শেষ মাসে কলকাতায় সব থেকে বেশি ঠান্ডা পড়েছিল ১৯৬৬ সালে। ২২ ডিসেম্বর। সে-বার পারদ নামতে নামতে পৌঁছে গিয়েছিল ৭.২ ডিগ্রিতে। এ বার ততটা না-হলেও পারদ কী খেল্ দেখায়, সেটাই দেখার!
আরও পড়ুন: হাওড়ায় হাঙ্গামার পিছনে দায়ী বহিরাগতরা, দাবি তদন্তকারীদের