Coal Scam

সুপ্রিম কোর্টে লালা, ছাড় নেই গ্রেফতারে

রাজ্যের অনুমতি ছাড়া রেলের এলাকায় সিবিআইয়ের তদন্ত করার অধিকার রয়েছে কি না, সুপ্রিম কোর্ট এ দিন তা খতিয়ে দেখতে রাজি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:০৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

কয়লা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা ও গ্রেফতারি এড়াতে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া সিবিআই রেলের এলাকায় কয়লা পাচারের তদন্ত করতে পারে না। লালার হয়ে পোড়খাওয়া আইনজীবী মুকুল রোহতগি আজ তাঁকে গ্রেফতারি থেকে আপাতত রক্ষারও আর্জি জানান। রোহতগির আশঙ্কা, যে কোনও সময় লালাকে গ্রেফতার করা হতে পারে।

Advertisement

রাজ্যের অনুমতি ছাড়া রেলের এলাকায় সিবিআইয়ের তদন্ত করার অধিকার রয়েছে কি না, সুপ্রিম কোর্ট এ দিন তা খতিয়ে দেখতে রাজি হয়েছে। কিন্তু লালার গ্রেফতারি আটকাতে কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ জারি করতে রাজি হয়নি। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের অবস্থান, এ বিষয়ে অনুপ ও সিবিআই, দু্’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরেই রায় দেওয়া হবে। আগামী সোমবার, ১ মার্চ ফের শুনানি হবে। অর্থাৎ, লালাকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের সামনে এখনও কোনও বাধা নেই। যদিও লালাকে সিবিআই এখনও খুঁজে পায়নি।

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছিলেন, কয়লা কাণ্ডে অভিযুক্ত লালাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীর বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নিয়মিত টাকা জমা করতেন। সিবিআই অভিষেকের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে। রাজ্যে রেলের বিভিন্ন সাইডিং এলাকা থেকে কয়লা চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রথমে আয়কর দফতর, তার পরে সিবিআই কয়লা-কাণ্ডের তদন্তে নামে। লালার বাড়ি, অফিসে তল্লাশি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত শুরু হয়।

Advertisement

লালা প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, রাজ্যের অনুমতি ছাড়া সিবিআই এই তদন্ত শুরু করেছে। সিবিআইকে রাজ্যে কোনও মামলার তদন্ত করতে দেওয়ার ‘সাধারণ সম্মতি’ ২০১৮ সালে প্রত্যাহার করে নিয়েছে নবান্ন। হাইকোর্টে প্রথমে এক বিচারপতির বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, রেলের জায়গার বাইরে সিবিআইকে কোনও তল্লাশি করতে হলে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু ১২ ফেব্রুয়ারি ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, রাজ্যের সর্বত্রই সিবিআই কয়লা পাচারের তদন্ত করতে পারবে। এই রায়ের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন লালা।

হাইকোর্টে যেমন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত লালার যুক্তি সমর্থন করেছিলেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের হয়ে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও সিবিআই তদন্তে আইনি প্রশ্নে আপত্তি তুলেছেন। লালা সুপ্রিম কোর্টে করা মামলায় যুক্তি দেন, কোনও রাজ্যের মধ্যে রেলের এলাকায় তদন্ত করতে হলে সিবিআইকে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে। সিবিআইয়ের দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট আইনে কোথাও রেলের এলাকার কথা বলা নেই। তা চিহ্নিত করা নেই। এই তদন্তে অভিযোগ কয়লা খনি এলাকা সংক্রান্ত। তা রেলের এলাকায় পড়ে না। রেল-এলাকার মধ্যে অপরাধ হলে তদন্তের দায়িত্ব আরপিএফ-এর।

সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, লালার সঙ্গে গরুপাচারে অভিযুক্ত এনামুল হকেরও বোঝাপড়া ছিল। কয়লা পাচারের সময় এনামুলের ‘সিন্ডিকেট’-এর সাহায্য নিত লালা। উত্তরবঙ্গ-সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতেও পাচার চলত। কয়েক মাস ধরেই লালার সন্ধানে সিবিআই তল্লাশি চালাচ্ছে। রাজনৈতিক মদতের পাশাপাশি লালার সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসন, ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড, রেল কর্তাদের একাংশেরও যোগাযোগ রয়েছে বলে সিবিআইয়ের দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement