দু’টিই দেশের অঙ্গরাজ্য। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের যানবাহন সিকিমের মাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গাতেই যেতে পারে। অথচ সিকিমের গাড়ি পশ্চিমবঙ্গের যে-কোনও প্রান্তে চলাচল করে।
এই ব্যবস্থা বদলের আবেদন বারবার ব্যর্থ হওয়ায় এ বার সিকিমের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণ সংক্রান্ত চুক্তি প্রয়োজনে বাতিল করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার পথ-নিরাপত্তা নিয়ে এক বৈঠকে মমতা এই নির্দেশ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে সিকিমের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করার জন্য অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে আইনি পরামর্শ নিচ্ছি।’’
পরিবহণ দফতরের খবর, ২০০৭ সালে সিকিমের সঙ্গে বাংলার ‘রেসিপ্রোকাল ট্রান্সপোর্ট এগ্রিমেন্ট’ হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী এ রাজ্যের ১৩ আসন পর্যন্ত ম্যাক্সি ক্যাবগুলি সিকিমের গ্যাংটক, পেলিং ও নামচি বাজার পর্যন্ত যেতে পারে। অথচ সিকিমের গাড়ি আসতে পারে পশ্চিমবঙ্গের যে-কোনও জায়গায়। উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীরা অনেক দিন ধরেই এই চুক্তি পরিবর্তনের আর্জি জানাচ্ছেন রাজ্যের কাছে। চুক্তি বদলাতে পরিবহণ দফতর কয়েক বার সিকিম সরকারকে চিঠি লিখেছে। কিন্তু সিকিম তাতে কান দেয়নি।
উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটরদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন ‘এতোয়া’র কার্যনির্বাহী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘পর্যটকেরা যাতে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন, সেই জন্য দুই রাজ্যে (পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম) গাড়ি চলাচলে কোনও বিধিনিষেধ থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। আমরা চাই, সিকিম এই ব্যাপারে দ্রুত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসুক।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পর্যটনের মরসুমে রোজ উত্তরবঙ্গ থেকে অন্তত তিন হাজার গাড়ি সিকিমে যায়। সিকিম থেকে বাংলায় আসে প্রায় চার হাজার গাড়ি। পর্যটনের মরসুম ছাড়াও সিকিমের অন্তত দেড় হাজার গাড়ি প্রতিদিন শিলিগুড়ি হয়ে উত্তরবঙ্গের আসে। সিকিমের শ’দেড়েক ট্যাক্সি-গাড়ি দৈনিক যাতায়াত করে বাগডোগরা বিমানবন্দরে।