ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গির পরিস্থিতি নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে। ভিন্ রাজ্যে গিয়েও একই কথা জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্প সংক্রান্ত একাধিক বৈঠক করতে মঙ্গলবার মুম্বই সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে পৌঁছেই তাঁকে ডেঙ্গি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। এবং জবাবে মুখ্যমন্ত্রী ফের বলে দেন, ডেঙ্গি নিয়ে অহেতুক গুজব ও আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে কিছু মহল থেকে।
মুম্বই বিমানবন্দরে এ দিন সন্ধ্যায় ডেঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ সব গুজব! গুজব ছড়াবেন না, আতঙ্ক ছড়াবেন না। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালে ১৩ জনের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে।’’ সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘এই মহারাষ্ট্রেই তো ৬৯৫ জন ইতিমধ্যে মশাবাহিত রোগে মারা গিয়েছেন। এ নিয়ে অযথা গুজব ছড়ানোর কোনও মানে হয় না!’’ নবান্নে সোমবার ডেঙ্গি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যা তথ্য দিয়েছিলেন, মুম্বইয়ে এ দিন প্রায় তারই পুনরাবৃত্তি করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন কলকাতা থেকে মুম্বই আসার পথেও ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে নজরদারি ও পর্যালোচনার কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। স্থানীয় পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলি যাতে ডেঙ্গি সচেতনতায় আরও জোরদার প্রচারে নামে, সেই নির্দেশও দিয়েছেন। তবে কয়েকটি কর্পোরেট হাসপাতাল ও বেসরকারি কিছু সংস্থা এই সময়ে ডেঙ্গি আতঙ্ক ছড়িয়ে ব্যবসা বাড়িয়ে নিতে চাইছে বলেও তাঁর কাছে নির্দিষ্ট খবর আছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিরোধীরা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলছে। সরকারি হাসপাতালে ১৩ জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী যে তথ্য দিয়েছেন, তা বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডেঙ্গি নিয়ে যে তথ্য দিয়েছিলেন আর মুখ্যমন্ত্রী যে তথ্য দিচ্ছেন, দু’টো তো বিভ্রান্তিকর! তা হলে দু’জনের কেউ এক জন মিথ্যা বলছেন! যিনি বিভ্রান্ত করছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ সুজনবাবু ফের দাবি করেছেন, ‘‘রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি যেখানে পৌঁছেছে, তাতে অবিলম্বে একে মহামারি ঘোষণা করা হোক। স্বাস্থ্য তো যৌথ তালিকাভুক্ত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকই বা চুপ করে রয়েছে কেন? তারাও হস্তক্ষেপ করুক।’’
ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থতার প্রতিবাদে এ দিন কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরো কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেছে বামেরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুজনবাবু। পুরসভার সদর দফতরে বাম বিক্ষোভ হবে কাল, বৃহস্পতিবার। সে দিনই রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর দ্বারস্থ হওয়ার কথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর।
রোগ মোকাবিলায় রাজ্যের ব্যর্থতা নিয়ে সরব বিজেপি-ও। দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ দিনই কলকাতায় বলেন, ‘‘রাজ্যে যে ভাবে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে তা লজ্জাজনক! মুখ্যমন্ত্রীকে এর জবাব দিতে হবে। উনি যে ডেঙ্গি প্রতিরোধে ব্যর্থ, তা তাঁকে মেনে নিতে হবে।’’