দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে খুলে যায় এসএসকেএম-এর জরুরি বিভাগ কিন্তু তার আগেই মারা গিয়েছেন প্রতিমা মণ্ডল।—নিজস্ব চিত্র।
তখনও এসএসকেএম হাসপাতালে আসেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জরুরি বিভাগের সামনে থিক থিক করছে কালো মাথার ভিড়। আউটডোর বন্ধ, জরুরি বিভাগে তালা। আদৌ চিকিৎসা মিলবে কিনা, জানা নেই রোগীর পরিবারের।
ওই জরুরি বিভাগের সামনে বসেই বছর চুয়াল্লিশের অমরেশ মণ্ডল অঝোরে কেঁদে চলেছেন। দু’দিন হাসপাতাল চত্বরে থাকার পর, নিজের বৌদিকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করতে পেরেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় চিকিৎসায় শুরু করা যায়নি বলে তার অভিযোগ।
এর কিছু ক্ষণ পরই দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে খুলে যায় এসএসকেএম-এর জরুরি বিভাগ। হাসপাতাল চত্বরে পড়ে থাকা রোগীদের দেখার পর, তাঁদের চিকিৎসা দ্রুত শুরু করার নির্দেশও দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দৃশ্য যখন চোখের সামনে দেখছেন অমরেশবাবু এবং তাঁর পরিবার। তখন সব শেষ। সেই জরুরি বিভাগ থেকেই জানানো হয়, মারা গিয়েছেন প্রতিমা মণ্ডল। কথা বলার ভাষা নেই স্বামী প্রশান্তের। হঠাৎ শরীর খারাপ হওয়ায় প্রতিমাকে ভর্তি করা হয়েছিল। অমরেশবাবুর আক্ষেপ, “আগে কেন ব্যবস্থা নিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। তিন দিন পড়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী আগে ব্যবস্থা নিলে বেঁচে যেত।”
আরও পড়ুন: নিঃশর্ত ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী, না হলে আন্দোলন চলবে, এনআরএস-এর জুনিয়র ডাক্তারদের ঘোষণা
এ দিন হাসপাতালে ঢুকেই জরুরি বিভাগের সামনে ভাগ্নেকে নিয়ে বসে থাকতে দেখে রোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরুলিয়ার বাসিন্দা বলরাম মাহাতো সম্পর্কে মামা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত চিকিৎসা শুরু হল ভাগ্নের। মস্তিষ্কের সমস্যা নিয়ে পুরুলিয়া থেকে ঠাঁই হয়েছে এই এসএসকেএম-এ।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সঙ্কট আরও জটিল, বিক্ষোভে অনড় ডাক্তাররা, রাতে ইস্তফা এনআরএস অধ্যক্ষেরও
আরও একজন গুরুতর আহত অবস্থায় মেঝেতেই শুয়ে ছিলেন। মাথায় চোট, পায়ে চোট। বাইক দুর্ঘটনায় আঘাত পেয়েছিলেন বীরভূমের বাসিন্দা সঞ্জয় মুদি। তাঁরও এ দিন চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সবার ভাগ্য সঞ্জয়ের মতো হয়নি। গত কয়েক দিন ধরে কর্মবিরত চলায় অনেকেই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কলকাতার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ঘুরে ঘুরে ফিরে গিয়েছেন। অনেকের আত্মীয় মারাও গিয়েছেন বলে অভিযোগ।