মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের জন্য বহরমপুরে সাজগোজ। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
গুঞ্জনটা শোনা যাচ্ছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। সম্প্রতি নবান্নের অলিন্দ থেকেও খবর এসেছে— প্রশাসনিক সুবিধার জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা ভাগ অবশ্যম্ভাবী। তার প্রথম ধাপ হিসেবে পুলিশ জেলা হিসেবে আপাতত ভাগ করা হয়ে মুর্শিদাবাদ জেলাকে।
তা নিয়ে চর্চাও শুরু হয়েছে। হালের সোশ্যাল মিডিয়া তা নিয়ে সবচেয়ে সরব। সেখানে, বড় জেলার প্রশাসনিক কাজে সমস্যা থেকে ছোট জেলার অন্য অসুবিধা— মত আসছে দু’তরফেই। সে কথা নবান্নেও যে পৌঁছয়নি এমন নয়।
আজ, মুর্শিদাবাদ সফরে তা নিয়ে মুখ খোলেন কিনা মুখ্যমন্ত্রী— প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক দল, আগ্রহ দানা বেঁধেছে সব স্তরেই। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘প্রশাসনিক সুবিধার্থে, জেলা ভাগ হতেই পারে। তবে, তা নিয়ে জেলার মানুষ কি ভাবছেন, তা-ও দেখা দরকার।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা কানাঘুষো শুনছি জঙ্গিপুর ও লালবাগ মহকুমাকে নিয়ে একটি জেলা হচ্ছে। কিন্তু লালবাগ থেকে বহরমপুরের দূরত্ব যেখানে ৯ কিলোমিটার, সেখানে লালবাগ থেকে জঙ্গিপুরের দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। সুতরাং লালবাগ থেকে জঙ্গিপুরে যাওয়া যুক্তিসঙ্গত নয়। এই ভৌগোলিক সসম্যাগুলো প্রশাসনের মাথায় রাখা উচিত।’’
বিরোধীরা অবশ্য দাবি করছেন, উন্নয়নের জন্য, প্রশাসনিক সুবিধার জন্য জেলা ভাগ হওয়া কাম্য। জঙ্গিপুরের সাংসদ তৃণমূলের খলিলুর রহমান বলছেন, ‘‘প্রশাসনিক সুবিধার্থে পুলিশ জেলা হিসেবে ভাগ হতে পারে জেলা, তেমনই আভাস পেয়েছি। সরকারি ভাবে এখনও আমাদের তা জানানো হয়নি। তবে ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, জেলা ভাগ হলে মানুষের সুবিধা হবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদকে ভেঙে দু’টি জেলা হতে পারে। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী উত্তর ও দক্ষিণ, এই দুই ভাগে জেলা ভাগের সম্ভাবনা। প্রথমে পুলিশ জেলা হিসেবে ভাঙা হবে মুর্শিদাবাদকে। পরে আলাদা জেলার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। জঙ্গিপুর ও লালবাগ মহকুমাকে নিয়ে উত্তর জেলা এবং কান্দি, বহরমপুর ও ডোমকলকে মহকুমাকে নিয়ে দক্ষিণ জেলা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। লালবাগ মহকুমাকে জঙ্গিপুরের সঙ্গে যুক্ত করার আভাস পেতেই ক্ষুব্ধ অনেকের অভিযোগ, লালবাগ থেকে বহরমপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা যতটা সহজ, জঙ্গিপুরে ততটা সহজ নয়।
বুধবারের সফরে জেলা ভাগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও কথা বলবেন কি না তা নিয়ে চর্চার মধ্যেই জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘জেলা ভাগ নিয়ে সরকারি ভাবে ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে মুর্শিদাবাদ ভেঙে দু’টি পুলিশ জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ হতে পারে।’’