কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপপ্রেস দুর্ঘটনার অব্যবহিত পরেই এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্ধারকার্যের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছিলেন। নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব-সহ রাজ্য প্রশাসনের পদস্থ অফিসারদের। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তুতি নেন উত্তরবঙ্গ রওনা হওয়ার। কিন্তু বিমান সঙ্কুলানের অভাবে সোমবার বিকেলের আগে মমতা রওনা দিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বিকাল সাড়ে ৪টায় বিমানে উত্তরবঙ্গ রওনা হচ্ছেন মমতা। বাগডোগরা নেমেই তিনি যাবেন উত্তরবঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে রেল দুর্ঘটনায় আহতেরা ভর্তি রয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার কথা শোনার পরেই মমতা অকুস্থলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টের আগে বাগডোগরা যাওয়ার কোনও বাণিজ্যিক উ়ড়ান নেই। রাজ্য সরকার যে বিশেষ বিমানটি নিয়ে রেখেছে, সেটিও অনিবার্য কারণে সোমবার পাওয়া যায়নি। দিল্লি বা অন্য রাজ্য থেকে বিমান এনে উত্তরবঙ্গ রওনা হতে গেলেও বিকেল গড়িয়ে যাবে। ফলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল, বিকালের বাণিজ্যিক উড়ানেই উত্তরবঙ্গে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, হেলিকপ্টারের বন্দোবস্ত করারও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা-ও পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া উত্তরবঙ্গে আবহাওয়ার যা অবস্থা, তাতে কপ্টার ওড়ার ক্ষেত্রেও ঝুঁকি রয়েছে।
দুর্ঘটনার কথা শুনেই মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। জেলার পদস্থ কর্তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁর। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দল যাতে উদ্ধারকার্যে নামে সে ব্যাপারেও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ছবি দেখে মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, তাঁর গাইসাল রেল দুর্ঘটনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, ইচ্ছে থাকলেও দিনের বেলা অকুস্থলে পৌঁছতে পারবেন না তিনি। বিকেলের বিমানে রওনা হয়ে তিনি যাবেন হাসপাতালে। সেখানে দুর্ঘটনায় জখম যাত্রীদের চিকিৎসা চলছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, সংলগ্ন এলাকার বিধায়কদেরও যেতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর জুন মাসে ওড়িশার বাহানগা বাজার এলাকায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। সন্ধ্যে নাগাদ ঘটেছিল ওই দুর্ঘটনা। পরের দিনই অকুস্থলে পৌঁছেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ধরনের দুর্ঘটনা বা কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে, সেখানে পৌঁছে যাওয়া মমতার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। লোকসভা ভোটের আগে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত ধূপগুড়িতে পৌঁছেছিলেন রাত্রিবেলাতেই। তার পর টানা তিন দিন সেখানে থেকে উদ্ধারকাজ, ত্রাণের কাজ তদারকি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারও ফাঁসিদেওয়া পৌঁছতে সোমবার সকাল থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিমান জটিলতায় তা থমকে যায়। শেষে বিকেলে রওনা হচ্ছেন তিনি।