মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সব মিলিয়ে বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি ৫০ হাজার কোটি টাকা ছুঁতে পারে। —নিজস্ব চিত্র।
ত্রাণ নিয়ে যেন মানুষের মধ্যে কোনও ক্ষোভ না থাকে। সবাই যেন ত্রাণ পায়। বসিরহাটে প্রশাসনিক কর্তাদের এ ভাবেই ত্রাণ বিলির বিষয়ে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পর বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের বুলবুল বিধ্বস্ত এলাকা আকাশ পথে বুধবার ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কপ্টারে পরিস্থিতি ঘুরে দেখে তিনি বসিরহাটে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন।
মমতা এ দিন বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যে প্রায় ১৫ লাখ হেক্টর জমিতে ফসল নষ্ট হয়েছে। আকাশ পথে দেখলাম অনেক জায়গায় এখনও জল জমে রয়েছে। বাঁধ ভেঙে জলও ঢুকেছে।” তিনি প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানান, গোটা এলাকায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বসিরহাটে বুলবুলের তাণ্ডবে প্রাণ গিয়েছে পাঁচ জনের। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘ভয়াবহ পরিস্থিতি। কলকাতা থেকে বোঝা যায় না কতটা ক্ষতি হয়েছে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনও বাঁধ ভাঙা রুখতে সেচ কর্তাদের ম্যানগ্রোভ অরণ্য বাড়াতে নির্দেশ দেন। সঙ্গে সুন্দরবনে ভাঙন রুখতে যে বিশেষ ধরণের ঘাস ব্যবহার করছে বন দফতর, সেই ঘাস ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। তিনি সেচ কর্তাকে বলেন, ‘‘বাঁধ কংক্রিট করে রোখা যাবে না। প্রতি বছর বাঁধ ভাঙবে। তাই ম্যানগ্রোভ বাড়ান।”
আরও পড়ুন: ৬০ আসনেই ঘুরবে ভাগ্য, তৃণমূলকে হিসেব পিকের
আরও পড়ুন: রাস উৎসবেও রাজ্যকে বিঁধে ফিরলেন ধনখড়
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ওই এলাকায় অন্য ধরনের চাষ কতটা করা যায়, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন কৃষি আধিকারিকদের। আয়লার পরেও সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকে যাওয়া। নোনা জল ঢুকে যাওয়ায় বেশ কয়েক বছর পতিত হয়ে যায় ওই জমি। ঠিক সে রকম এ বারও গোসাবা, হিঙ্গলগঞ্জ বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের জমি জলমগ্ন। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জমা জল সরানোর পাশাপাশি দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা ফিরিয়ে আনার উপরেও জোর দেন। বসিরহাট এলাকায় ১ হাজার ২০০-টিরও বেশি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ কর্তারা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে, অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা সম্ভব হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জলমগ্ন এবং প্লাবিত এলাকায় মেডিক্যাল টিম এবং পানীয় জল পর্যাপ্ত পরিমাণে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে পরিবার প্রতি ১২ কেজি চাল এবং সঙ্গে শিশুখাদ্য ও জ্বালানি হিসাবে ৫ লিটার কেরোসিন অবিলম্বে বিলি করার নির্দেশ দেন জেলা কর্তাদের। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সব মিলিয়ে বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি ৫০ হাজার কোটি টাকা ছুঁতে পারে।