নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে। ছবি: সংগৃহীত।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র গতিবিধি নজরে রাখতে রাতভর নবান্নে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দুপুরেও তিনি সেখানেই রয়েছেন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল থেকে একাধিক বার নিজের ১৪ তলার দফতর থেকে কন্ট্রোল রুমে নেমে এসে দুর্যোগ-পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর ফের নিজের দফতরে ফিরে জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন বলে ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জেলায় ‘ডেনা’র প্রভাব কেমন, সেই সম্পর্কে এখনও খোঁজখবর নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কখনও তিনি যোগাযোগ করছেন জেলাশাসকদের সঙ্গে, কখনও বা শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে। পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে তৎক্ষণাৎ প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিচ্ছেন তিনি। দুপুরেই সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং উদ্ধারকাজের বিষয়ে সবিস্তারে জানিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধির দিকে নজর রাখতে সারা রাত নবান্নেই থাকবেন তিনি। সেই মতো তাঁর নজর ছিল নবান্নের কন্ট্রোল রুমে থাকা জায়ান্ট স্ক্রিনে। তবে প্রশাসনের তরফে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া থাকলেও ‘ডেনা’ তেমন প্রভাব ফেলতে না পারায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।
দুর্যোগ পরিস্থিতির উপরে নজরে রাখতে সারা রাত পুরসভাতেই ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রাতের দিকে এক বার পুরসভার ছাদে উঠে আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করেন তিনি। ঠনঠনিয়া কিংবা মোমিনপুরের মতো শহরের নিচু এলাকাগুলিতে বৃষ্টির কারণে জল জমেছে কি না, সেই সম্পর্কে খোঁজখবর নেন ফিরহাদ। বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি জানতে তিনি নিয়মিত খবর নেন মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যান এবং অন্য পুর আধিকারিকদের কাছ থেকে। পরিস্থিতি মোটের উপরে নিয়ন্ত্রণে, এই খবর পাওয়ার পর ভোর ৫টা নাগাদ পুরসভা থেকে বেরিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন মেয়র।
সল্টলেকের বিদ্যুৎ ভবনে বসে সারা রাত পরিস্থিতির উপরে নজর রেখেছিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলবর্তী এলাকা তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মূলত মোটের উপর সর্বত্র বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে কি না, তার উপরে নজর রাখেন অরূপ। ঝড়ের কারণে গাছ পড়ে যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, সেখানে পরিষেবা স্বাভাবিক করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন তিনি। ভোরের দিকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন অরূপ। সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা সরেজমিনে জানিয়ে শুক্রবার বিকেলের দিকে একটি সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন তিনি।