(বাঁ দিকে) জ্যোতি বসু এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
জুনিয়র ডাক্তার ৩, রাজ্য সরকার ০
৪১ বছরের আন্দোলনে এটাই কি সঠিক স্কোরকার্ড? নানা মতামত আসতে পারে। কিন্তু তিনটি আন্দোলনই দাবিদাওয়া প্রাপ্তির হিসেবে ‘বিজয়ী’!
সাল ১৯৮৩। বাংলায় তখন দ্বিতীয় বামফ্রন্ট সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। ছ’মাসের বেশি চলা জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলনের দাবিদাওয়া শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছিল সরকার! কিন্তু পরবর্তী কালে তার প্রয়োগ নিয়ে সন্তুষ্ট হননি আন্দোলনকারীরা।
সাল ১৯৮৭। কম-বেশি একই দাবিতে আবার পথে নামেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ৪৩ দিন কর্মবিরতির পর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বসু। সরকার লিখিত ভাবে দাবি মানার পর ওঠে কর্মবিরতি।
২০২৪ সাল। বাংলার সরকারে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের এক বার জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে উত্তাল বাংলা। সামাজিক প্রভাবের নিরিখে ছাপিয়ে গেল আগের দুই আন্দোলনকেও। প্রথমে কর্মবিরতি, পরে ‘আমরণ অনশন’। অধিকাংশ দাবিই পূরণ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম দফার আলোচনার পর কর্মবিরতি ওঠে এবং দ্বিতীয় দফার আলোচনার পর ‘আমরণ অনশন’ প্রত্যাহার করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
দুই জমানার তিন আন্দোলনের মধ্যে মিল অনেক। অমিলও তুচ্ছ নয়। তবে তিন বারই মূলত ‘সফল’ জুনিয়র ডাক্তারেরা।
১৯৮২ সালে সারা রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তারেরা তৈরি করেছিলেন এবিজেডিএফ (অল বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস’ ফেডারেশন)। পরের বছর মার্চে ওই সংগঠন হাসপাতালগুলিতে জীবনদায়ী ওষুধ, ব্লাড ব্যাঙ্ক, ইসিজি মেশিন, ২৪ ঘণ্টার এক্স-রে পরিষেবা-সহ আরও বেশ কিছু দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল। ছিল ভাতাবৃদ্ধির দাবিও। চলে মিটিং-মিছিল। সঙ্গে দফায় দফায় কর্মবিরতি। জুন মাসে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের দুই হাউসস্টাফকে বরখাস্ত করার ঘটনায় বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের আউটডোর, ইনডোর এবং জরুরি পরিষেবা বয়কটের ডাক দেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। জুলাইয়ে মুখ্যমন্ত্রী বসু আলোচনায় বসেন। তার পর মাসে ৫০ টাকা ভাতাবৃদ্ধির ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত দাবিগুলি নিয়ে ‘নীরবতা’ আবার আন্দোলনে নামায় ডাক্তারদের। ভাতাও বয়কট করা হয়। সেই আন্দোলনের অন্যতম নেতা চিকিৎসক তরুণ মণ্ডলের (২০০৯ সালে তিনি তৃণমূল সমর্থিত এসইউসিআই সাংসদ হয়েছিলেন) কথায়, ‘‘আমাদের ডাক্তারি কোর্সের কমপ্লিশন সার্টিফিকেট এবং ভাতা আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল সরকার। পুলিশ দিয়ে আন্দোলন এবং আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু হিতে বিপরীত হয় সরকারের।’’ তৎকালীন ঘটনাপ্রবাহ বলছে, ৪ অক্টোবর এসএসকেএমে এবং ৫ অক্টোবর এনআরএসে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর পুলিশ লাঠি চালিয়েছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে সিপিএমের ক্যাডারবাহিনীও আক্রমণে নেমেছিল বলে অভিযোগ। তরুণের কথায়, ‘‘৬ অক্টোবর থেকে ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ইনডোর ছাড়া সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়। পাঁচ-ছ’দিন পর মুখ্যমন্ত্রী আলোচনায় বসেন। দাবি মানার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর আমাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছিল।’’
১৯৮৩ সালের আন্দোলনে জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল। ছবি: চিকিৎসক তরুণ মণ্ডলের সংগ্রহ থেকে।
বছর তিনেকের মধ্যেই আবার এক জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলন। ১৯৮৬-র শেষের দিকে শুরু হওয়া সেই আন্দোলনকে বলা চলে আগের আন্দোলনের ‘ফলো আপ’। দাবিদাওয়া প্রায় একই। আন্দোলনকারীদের স্লোগান ছিল, ‘স্বাস্থ্য কোনও ভিক্ষা নয়, স্বাস্থ্য আমার অধিকার’। সেই আন্দোলনের অন্যতম নেতা চিকিৎসক অমিতাভ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সে সময় বাম সরকার জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে মাইনে বৃদ্ধির আন্দোলন বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে কথা দিয়েও কথা না-রাখা সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রগুলোই ছিল আমাদের ওই আন্দোলনের প্রধান দিক।’’ টানা ৪৩ দিন কর্মবিরতি চলে রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে (ঘটনাচক্রে, এই ২০২৪ সালেও ৪৩ দিনই কর্মবিরতি চালালেন জুনিয়র ডাক্তারেরা)। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী বসু জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনায় বসে দাবি মানার কথা জানান। সরকারের থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরেই সম্পূর্ণ কর্মবিরতি তোলার সিদ্ধান্ত নেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ডাক্তারদের দাবি মেনে চিকিৎসা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকার ‘মণি ছেত্রী কমিটি’ গঠন করেছিল।
শুধু ৪৩ দিনের কর্মবিরতিতেই নয়, আর একটি জায়গাতেও ১৯৮৭ সালের আন্দোলনের সঙ্গে মিল রয়েছে ২০২৪ সালের। সেটি হল ‘প্যান জিবি’ বৈঠক। এ বছর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক অনেকের নজর কেড়েছে। অপেক্ষারত সাংবাদিকদের ‘ক্লান্ত’ করেছে। অমিতাভ জানাচ্ছেন, তাঁদের আন্দোলনের সময়েও এমনই হত। যে কোনও ‘বড়’ সিদ্ধান্ত নিতে সব হাসপাতালের প্রতিনিধি বৈঠকে বসতেন। মজাচ্ছলেই অমিতাভ বললেন, ‘‘প্যান জিবির দৈর্ঘ্যে দেবাশিস-অনিকেতরা আমাদের হারাতে পারেনি। আমাদের একটা জিবি ১১ ঘণ্টার বেশি চলেছিল। রাত ১০টায় শুরু হয়ে শেষ হয়েছিল পরদিন সকাল ৯টা পেরিয়ে।’’ একই সঙ্গে তাঁর স্বীকৃতি, ‘‘তবে আন্দোলনের সামাজিক প্রভাব থেকে শুরু করে এর সাফল্য, সব দিক থেকেই এ বারের আন্দোলন আগের দুটো আন্দোলনকেই ছাপিয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই আন্দোলন সমাজের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’’ তবে অমিতাভের সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন তরুণ। তাঁর মতে, ‘‘আন্দোলনের সময়, আন্দোলনের বিষয়, প্রতিপক্ষ, জনসমর্থন, প্রচার— সব দিক থেকে বিচার করলে একটা আন্দোলনের সঙ্গে অন্য আন্দোলনের তুলনা করা উচিত হবে বলে আমার মনে হয় না।’’ এ বারের আন্দোলনের ব্যাপ্তি এবং ব্যাপক জনসমর্থনের কথা মেনেও তিনি বলছেন, ‘‘আমাদের দাবি দীর্ঘ দিন ধরে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হয়েছিল। এ বারের আন্দোলনে কিন্তু সেই সময় লাগেনি।’’
১৯৮৩ সালের আন্দোলনে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি জুনিয়র ডাক্তার। ছবি: চিকিৎসক তরুণ মণ্ডলের সংগ্রহ থেকে।
এ বছরের আন্দোলনের সূত্রপাত ৯ অগস্ট। আরজি করে ধর্ষণ-খুনকে কেন্দ্র করে সে দিনই কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আন্দোলন, কর্মবিরতি ছড়িয়ে পড়ে অন্য সরকারি হাসপাতালগুলিতেও। ১৬ অগস্ট তৈরি হয় জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠন ডব্লিউবিজেডিএফ (ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট)। পাঁচ দফা দাবি নিয়ে তাদের ৪৩ দিনের কর্মবিরতি শেষ হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতার বাড়িতে বৈঠকের পর দিন। অধিকাংশ দাবিই মেনে নিয়েছিল সরকার। কিন্তু সাগর দত্ত হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারেরা আক্রান্ত হওয়ার পর নতুন মোড় নেয় আন্দোলন। দাবির তালিকা আরও সুনির্দিষ্ট করে ১০ দফায় নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারের লিখিত নির্দেশিকা জারির দাবি তোলা হয়। ৫ অক্টোবর শুরু হয় ‘আমরণ অনশন’। তার ১৭ দিন পরে ২১ তারিখ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর অনশন ওঠে। দেখা যায়, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে অপসারণ ছাড়া আর সব দাবিই মূলত মেনে নিয়েছে সরকার। টাস্ক ফোর্স নিয়ে সরকারি নির্দেশিকাও জারি হয়েছে পর দিন। কী কী বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে নবান্নের বৈঠকে, তা ইমেল করে নথিবদ্ধ করা হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে।
তিন বারের আন্দোলন। তিন বারই ‘সফল’! এমন উদাহরণ বিরলই বটে। কেন এই ‘সাফল্য’? চাবিকাঠি কী?
প্রথম কারণ হিসেবে উঠে আসছে স্বাস্থ্যের মতো জরুরি বা আপৎকালীন পরিষেবায় জুনিয়র ডাক্তারদের ভূমিকা। চিকিৎসক-রাজনীতিক তরুণ মনে করেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারেরাই যে কোনও হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজে ২৪ ঘণ্টার জন্য মূল চালিকাশক্তি। হাসপাতালগুলির মেরুদণ্ডই তাঁরা।’’ তাঁর মতে, জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতিতে গেলে পরিষেবা যে ভাবে বিঘ্নিত হয়, তা সিনিয়র চিকিৎসকেরা পূরণ করতে পারেন না। শুধু তা-ই নয়, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিদাওয়ার সঙ্গে কোথাও না কোথাও গিয়ে রোগীর স্বার্থও জড়িয়ে যায়। অমিতাভের কথা, ‘‘চিকিৎসকদের দাবিদাওয়ার সঙ্গে সরাসরি সাধারণ মানুষ যুক্ত। যা অন্য যে কোনও আন্দোলনের থেকে চিকিৎসকদের আন্দোলনকে আলাদা করে দেয়।’’ তিনি মনে করেন, ‘‘যে আন্দোলন রাস্তায় জেতা যায় না, সে আন্দোলন আলোচনাতেও জেতা যায় না।’’ শুধু তা-ই নয়, জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিটি আন্দোলনে ‘রাজনৈতিক রং’-এর অনুপস্থিতিও সাফল্যের অন্যতম কারণ। অমিতাভের কথায়, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন স্বাধীন ও স্বতন্ত্র। তারা কোনও দলের কাছে মাথা নোয়ায় না। যদি হাসপাতালগুলির পরিষেবা ব্যাহত হয়, তবে সরকার তো চাপে পড়বেই। তাই প্রতি ক্ষেত্রেই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।’’
ঐক্যবদ্ধ থাকার দিক থেকেও আগের দুই আন্দোলনের তুলনায় এ বারের আন্দোলনকে এগিয়ে রাখছেন অমিতাভ। বলছেন, ‘‘তিরাশি বা সাতাশিতে শাসকদলের (সিপিএমের) সমর্থক জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি ভেঙে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। অনেকে সরাসরি আন্দোলনের বিরোধিতাতেও নেমেছিলেন। যদিও জুনিয়র ডাক্তারদের বিরাট অংশ দলমত নির্বিশেষে আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিল। এ বার কিন্তু শাসকদলের (তৃণমূলের) সমর্থক ডাক্তারদের সেই ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।’’
প্রসঙ্গত, এ বারেও আন্দোলনকারীদের মধ্যে নানা বিষয়ে নানা মতামত ছিল। অনেক ক্ষেত্রে গুরুতর মতানৈক্যও ছিল। তাঁরা তা অস্বীকার করেননি এবং এটা স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন। কিন্তু দীর্ঘ প্যান জিবি বৈঠকের অন্দরের মতবিরোধ তাঁরা বাইরে আসতে দেননি। প্রকাশ্যে তার ছাপ ফেলতেও দেননি।
২০২৪ সালের আন্দোলন। ধর্মতলার অনশনমঞ্চ। —ফাইল চিত্র।
১৮ বছর বয়স ‘নির্ভীক’ হয়! ২৮-এও তার রেশ থাকে। যাদবপুর থেকে আরজি কর আন্দোলনের ‘অবাধ্যতা’ কি শুধু বয়সের জন্যই প্রবীণ মুখ্যমন্ত্রীদের খানিক ‘প্রশ্রয়’ পায়? না কি ভিন্ন কোনও কারণ? মনোসমাজকর্মী মোহিত রণদীপ মনে করেন, ‘‘উচ্চশিক্ষিত কোনও অংশের ঐক্যবদ্ধ ভাবে তোলা দাবিকে উপেক্ষা করা কোনও সরকারের পক্ষেই সহজ নয়। পাশাপাশি, এই অংশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা-তর্ক চালাতে গেলে সরকারের মন্ত্রী-আমলাদেরও অনেক সতর্ক থাকতে হয়। আগুপিছু ভাবতে হয়। যা খুশি বুঝিয়ে দেওয়া যায় না।’’ তরুণ এবং অমিতাভও মনে করেন, জুনিয়র ডাক্তারদের ‘হোমওয়ার্ক’ প্রত্যেক আন্দোলনেই সরকারের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁদের বাড়তি সুবিধা দিয়েছে।
পাশাপাশিই এক ‘অদ্ভুত’ তথ্য জানিয়েছেন মনোসমাজকর্মী মোহিত। শিলিগুড়ির মহানন্দা-বালাসন সেতু তৈরি হয়েছিল জুনিয়র ডাক্তার এবং ডাক্তারি ছাত্রদের দাবি মেনে! উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার এবং ছাত্রেরা সেতুর দাবি তুলেছিলেন সত্তরের দশকে। ১৯৭৯ সালে জাতীয় সড়ক অবরোধ পর্যন্ত হয়। ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। দিন সাতেক জেলও খাটতে হয় তাঁদের। চিকিৎসক সুজন সেন তখন ওই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনিও। সুজন বললেন, ‘‘রোগীদের বেশ কয়েক কিলোমিটার বেশি ঘুরে পৌঁছতে হত হাসপাতালে। খরচও বেশি হত। তাই সেতুর দাবি। সেই সেতু তৈরি হতে অবশ্য বহু বছর লেগে গিয়েছিল। কিন্তু হয়েছিল শেষ পর্যন্ত।’’ কলকাতার জুনিয়র ডাক্তারেরাও তাঁদের পাশে দাঁড়ান। এ ভাবেই ‘নর্থ বেঙ্গল’ থেকে ‘সাউথ বেঙ্গল’ সেতুবন্ধন হয়েছিল সেই সময়।
দুই প্রজন্মের জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলনেও কি কোনও ‘সেতুবন্ধন’ হল? এই প্রজন্মের জুনিয়র ডাক্তারেরা কী বলছেন? পূর্বসূরিদের আন্দোলনের ইতিহাস কি জানেন আদৌ? এসএসকেএমের জুনিয়র ডাক্তার এবং চলতি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বিপ্রেশ চক্রবর্তী প্রশ্ন শুনেই বললেন, ‘‘অবশ্যই! স্যরেদের মুখে তখনকার আন্দোলনের কথা শুনেছি। জ্যোতি বসুর আমলেও আন্দোলন হয়েছিল। লাঠিচার্জ করা হয়েছিল স্যরদের উপর। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, শাসক যে-ই হোক, যখন সময় ও পরিস্থিতি চেয়েছে, আমরা প্রতিবাদ করেছি। তখন লাঠিচার্জ হয়েছিল। আর এখন থ্রেট কালচার!’’