Mamata Banerjee

বিড়ি বেঁধেছে জীবনে? শিশু কী জিনিস জানে? নাম না করে রাহুলকে ‘ফোটোশুট’ কটাক্ষ মমতার

কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ধর্না মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণ করলেন কংগ্রেসকে। তৃণমূলনেত্রী জানালেন, বাংলায় বিজেপিকে আগেও ঠেকিয়েছে তাঁর দল। আবারও ঠেকাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৪০
Share:

বাঁ দিক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

জীবনে কখনও বিড়ি বাঁধেননি যাঁরা, তাঁরাই আজ ‘ফোটোশুট’ করছেন। এখন এটাই ‘ফ্যাশন’। নাম না করেই শুক্রবার রেড রোডের ধর্না মঞ্চ থেকে এ ভাবেই রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলায় জোটের বিষয়েও আরও এক বার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন তৃণমূলনেত্রী। জানালেন, কংগ্রেস যা করছে, করুক, বাংলায় বিজেপিকে ঠেকাবে তৃণমূল। আগেও ঠেকিয়েছে, আবারও তা করবে।

Advertisement

‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র মাঝে বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে গিয়ে বিড়িশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন রাহুল। তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন। তাঁদের সঙ্গে বসে বিড়িও বাঁধতে দেখা যায় রাহুলকে। শুক্রবার সেই প্রসঙ্গই উঠে এল মমতার মুখে। যদিও রাহুলের নাম এক বারের জন্যও করেননি মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এখন নতুন একটা ফ্যাশন হয়েছে। শুধু ফোটোশুট হচ্ছে। জীবনে কখনও চায়ের দোকানে বসেনি। শিশুদের আদর করেনি। শিশু কী জিনিস, জানে না। জীবনে কখনও বিড়ি বাঁধেনি। বিড়ির বদলে হয়তো অন্য কিছু খায়। তারা আজ ফোটোশুট করছে।’’

এর আগে জোট-প্রসঙ্গ তুলেও কংগ্রেসকে বিঁধেছেন তৃণমূলনেত্রী। জোট নিয়ে রাহুল জানিয়েছিলেন যে, তৃণমূলের সঙ্গে আসন সংঝোতার প্রক্রিয়া চলছে। সেই বক্তব্যও উড়িয়ে দিয়েছিলেন মমতা। আগেও বলেছিলেন, শুক্রবার আবারও বলেন, কংগ্রেসকে দু’টি আসন ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারা (কংগ্রেস) ‘কথা শোনেনি’। তার পর থেকে আর কোনও আলোচনা হয়নি। মমতার কথায়, ‘‘আমিও রিজেক্ট করে দিয়েছি।’’ এর আগে বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে একই কথা জানিয়েছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘কারও সঙ্গে আমার কোনও কথা হয়নি। আমার প্রস্তাব প্রথম দিনেই প্রত্যাখ্যান করেছে! আমার সঙ্গে কারও কোনও আলোচনা হয়নি।’’

Advertisement

শুক্রবার ধর্না মঞ্চে মমতা বলেন, ‘‘আমি কংগ্রেসকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তোমরা সারা দেশে ৩০০টি আসনে লড়ো। আর বাকি ২৪৩টি আসনে আঞ্চলিক দলগুলিকে লড়তে দাও। ওরা শুনল না। মাতব্বরি করল। আজ কী হল?’’ এর পরেই তিনি জানিয়ে দেন, বিজেপিকে ঠেকাতে বাংলায় লড়বে তৃণমূল। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা যা করছে করুক, বাংলায় আমরা বিজেপিকে ঠেকাব। বিজেপিকে ঠেকাতে পারি, আগেও দেখিয়েছি, আবার দেখাব।’’ এর পর কংগ্রেসের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস সারা দেশে ৪০টি আসন পাবে কিনা জানি না! আগে নিজের জায়গা দেখাও। পারলে বারাণসীতে গিয়ে বিজেপিকে হারাও। রাজস্থানে তোমরা জেতা জায়গা হেরেছ। মধ্যপ্রদেশে গিয়ে বিজেপিকে হারাও।’’

বুধবার বিহার থেকে মালদহে ঢোকার পর দেখা গিয়েছিল, রাহুলের গাড়ির পিছনে কাচ ভেঙে গিয়েছে। সেই নিয়ে আঙুল উঠেছিল স্থানীয় প্রশাসনের দিকে। যদিও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব মমতার সরকারের দিকে কোনও আঙুল তোলেননি। পাল্টা জানিয়েছিল, প্রশাসনকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে। তৃণমূলনেত্রী যদিও এই নিয়েও কংগ্রেসের দিকেই পাল্টা আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যা কথা রটাচ্ছে। গাড়ির কাচ ভাঙল কাটিহারে, বলছে বাংলার ঘটনা। সব ভুয়ো কথা রটাচ্ছে। ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়াচ্ছে।’’ রাহুলের যাত্রাপথের বিষয়ে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘হঠাৎ করে দেখলাম বাংলায় চলে এল। এক বার বললও না কোন রাস্তা দিয়ে যাবে। আমরা নাকি ইন্ডিয়ার পার্টনার। এক বার বলার প্রয়োজন মনে করল না।’’ এই অভিযোগ তিনি রাহুলের এ রাজ্যে প্রবেশের আগেও করেছিলেন। আর সেই সঙ্গে প্রতি বারই কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ধুলিয়ানে বিড়ি শ্রমিকেরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাগরদিঘী উপনির্বাচনের আগে করা প্রতিশ্রুতি নিয়ে নালিশ জানাতে গিয়েছিলেন রাহুলকে। জানিয়েছিলেন, অভিষেক বললেও বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পায়নি। রাহুল শুনেও শোনেনি সে কথা। আর সে ভাবেই জোট গড়া নিয়ে আরও এক বার শীর্ষনেতৃত্বের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। মমতা যদিও তাতে আমল দেননি। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ধর্নামঞ্চে দাঁড়িয়ে নাম না করেই কটাক্ষ করলেন রাহুলকে। একহাত নিলেন কংগ্রেসকেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement