বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পূর্ব বর্ধমানের পর বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেও রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করলেন তিনি। দিলেন একাধিক নির্দেশও। একই সঙ্গে দলীয় বিধায়ক, সাংসদের জন্যও কাজ বেঁধে দিলেন মমতা। তাঁদের তহবিলের টাকা ভাঙা রাস্তা এবং স্কুলের জন্য খরচ করার কথা বললেন তিনি। সেই সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিক, ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার মতো ঘটনা নিয়েও কেন্দ্রকে তোপ দাগেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বীরভূমের অনেক জায়গায় জল জমেছিল। তবে এখন নেমেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যে সব দফতর রয়েছে, তাদের সকলের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে গেলাম। আগামী দু’দিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সে দিকে নজর রাখতে হবে।’’ তার পরই দলীয় বিধায়ক এবং সাংসদদের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছু নির্দেশ দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিধায়কদের বলেছি, তাঁদের তহবিলের টাকা দিয়ে গ্রামীণ রাস্তাগুলোর যতটা সম্ভব উন্নতি করার জন্য। সাংসদের নির্দেশ দিয়েছি ভাঙা স্কুল মেরামতের জন্য এক কোটি টাকা খরচ করতে। আর গ্রামীণ রাস্তার জন্য চার কোটি টাকা খরচ করার কথাও বলেছি।’’
বাংলার বন্যা পরিস্থিতি জন্য আবারও এক বার ডিভিসি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। মমতা আরও বলেন, ‘‘প্রতি বছর ডিভিসি জল ছেড়ে ‘ম্যান মেড’ বন্যা তৈরি করে। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আমাদের চিন্তা হয়। বাংলার বর্ষায় বাংলায় বন্যা হয় না। ঝাড়খণ্ডের জলে প্রতি বছর বাংলায় বন্যা হয়। জলশক্তি মন্ত্রক আমাদের না জানিয়ে জল ছেড়েছে।’’
বাংলার আবাস যোজনার আওতায় যে ১১ লক্ষ বাড়ি বানানোর কথা রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, সেই তালিকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের যুক্ত করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বন্যায় যে বাড়িগুলো সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে গিয়েছে, তা ১১ লক্ষ বাড়ির তালিকায় আছে কি না দেখতে হবে। যদি না থাকে তা সমীক্ষা করে যোগ করতে হবে। যেখান থেকেই হোক টাকা জোগাড় করে সেই বাড়িগুলো করব।’’ পাশাপাশি, ভিন্রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়েও তোপ দেগেছেন মমতা।