সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে সরস্বতী প্রতিমায় প্লাস্টিকের আবরণ। শুক্রবার শহরে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
পরের পর ঝঞ্ঝা। সেই সব পশ্চিমী ঝঞ্ঝায় বার বার হোঁচট খেয়েছে শীত। মাঘের শেষ পর্বে আবার একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং তার দোসর হরিয়ানা থেকে বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অক্ষরেখার প্রভাবে শুক্রবার অকাল-শ্রাবণ নেমেছিল বাংলায়। প্রকৃতির ওই জোড়া ফলার দাপটে এ দিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হয়েছে দফায় দফায়। তবে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আশ্বাস, আজ, শনিবার সরস্বতী পুজোর দিন থেকেই গাঙ্গেয় বঙ্গে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। শুধু তা-ই নয়, বিদ্যাদেবীর অর্চনায় হালকা শীতের যে-আবহ প্রত্যাশিত, তারও প্রসাদ মিলবে গাঙ্গেয় বঙ্গে। তবে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের দু’-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে।
দক্ষিণে আবহাওয়া শুষ্ক থাকলেও উত্তরবঙ্গের সরস্বতী পুজোয় বৃষ্টি হবে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। দার্জিলিং, কালিম্পং এবং ডুয়ার্সে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। হালকা বৃষ্টি হতে পারে মালদহ এবং দুই দিনাজপুরেও।
আবহাওয়া দফতরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী এ বারের মতো শীতের মেঘমুক্তির বিদায়-ঘণ্টা ইতিমধ্যেই বেজে গিয়েছে। তাই বৃষ্টি কমলে সে-ভাবে জাঁকিয়ে শীত পড়ার সম্ভাবনা কম। তবে আবহবিদদের অনেকে মনে করছেন, এখনই তেমন গরম পড়বে না। বরং সরস্বতী পুজোয় হালকা শীতের আমেজ পাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ভাবেই কলকাতা এবং সংলগ্ন বিভিন্ন জেলায় রাতের তাপমাত্রা তুলনায় কম থাকবে। সরস্বতী পুজোর পরে ধীরে ধীরে রাতের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে বলে মনে করছেন অনেকে।
আবহবিদেরা জানান, অক্ষরেখার টানে বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প পশ্চিমবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঢুকতে শুরু করে এবং তা ঘনীভূত হয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করেছে। এ দিন ভোর থেকেই বৃষ্টির সঙ্গে ছিল শ্রাবণী মেঘের গর্জন। হাওয়া অফিসের খতিয়ান অনুযায়ী এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কলকাতায় ২৬.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে প্রচুর বৃষ্টি হয় উপকূলবর্তী বিভিন্ন জেলায়। হাওয়া অফিসের হিসেব, ওই সময়ের মধ্যে দিঘায় ২৭ মিলিমিটার, দমদম এবং আলিপুরে ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। মেঘলা থাকায় দিনের তাপমাত্রাও সে-ভাবে মাথাচাড়া দিতে পারেনি।