প্রতীকী ছবি।
একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে মেরে গাছে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে তার সহপাঠীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গণধর্ষণে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে ধৃতের এক মামাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধেও।
তবে বছর ষোলোর ওই মেয়েটি সত্যিই খুন হয়েছে নাকি আত্মহত্যা করেছে, তা নিয়ে পুলিশ নিঃসন্দেহ নয়। কেননা বছর দেড়েক ধরে ছেলেটির সঙ্গে ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে গ্রামবাসীর একাংশের দাবি। মামাতো ভাই ছাড়া আরও দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর বাবা, যদিও তাদের নাম দেওয়া হয়নি।
নদিয়ার ধুবুলিয়ার রাজাপুর গ্রামে শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে। ওই রাতে মেয়েটির বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। তার ঠাকুমা জানান, ঘরে মেয়েটি একাই ছিল। তার পলিটেকনিক পড়ুয়া দাদাকে নিয়ে বারান্দায় শুয়েছিলেন ঠাকুমা। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে নাতনিকে ঘরে না দেখে তিনি চিৎকার জুড়ে দেন। জেগে উঠে তাঁর নাতি লোকজনকে নিয়ে আশপাশে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে।
সন্দেহের তালিকায় প্রথমেই ছিল মেয়েটির বছর উনিশের সহপাঠী তথা প্রেমিক। স্থানীয় সূত্রের খবর, ছাত্রীর দাদা প্রথমে তার বাড়িতে যায়। ছেলেটি বাড়িতে ছিল না। খানিক পরে সে বাড়ি ফিরতেই লোকজন তাকে চেপে ধরে। এলোমেলো কথা বলতে থাকে সে। তা থেকে কোনও হদিস মেলেনি। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এক চাষি মাঠে যেতে গিয়ে মেয়েটির বাড়ির কাছে গাছে তার দেহ ঝুলতে দেখেন। ছেলেটি সপ্তাহখানেক আগে মোবাইল ফোন দিয়েছিল ছাত্রীটিকে। সেটি এ দিন মেয়েটির পোশাকের ভাঁজেই পাওয়া গিয়েছে। ছাত্রীর দাদার অভিযোগ, রাতে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য বেরোলে তাকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। ছাত্রীর বাবা ধুবুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ছেলেটির মোবাইলে পাশের গ্রাম থেকে তার মামাতো ভাইয়ের ফোন এসেছিল। তাতেই সে ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ হয় অনেকের। সে পালিয়ে গিয়েছে।
ছেলেটির দাবি, ছাত্রীটি স্বেচ্ছায় তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। বাড়ির কাছেই তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়। কিন্তু বাড়ি ফিরে যাওয়ার আগেই চেঁচামেচি শুরু হওয়ায় দু’জনে ভয় পেয়ে যায়। মেয়েটিকে বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে সে বাড়ি ফিরে আসে। ধরা পড়ে যাওয়ার ছাত্রীটি আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে তার সন্দেহ।
এ দিন ছাত্রীর দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য নমুনাও সংগ্রহ হয়েছে। আজ, রবিবার ছেলেটিরও ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ময়নাতদন্তে ধর্ষণের প্রাথমিক প্রমাণ মেলেনি। তবে আরও তদন্ত দরকার। রবিবারই ছেলেটিকে কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হবে।