পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, ইংরেজিতে ‘নন-টিচিং স্টাফ’-এর সরাসরি বাংলা করে অশিক্ষক কর্মী বলা হয়ে থাকে। যেটা একেবারেই ঠিক নয়। অশিক্ষক কর্মী কথাটা শ্রুতিকটু। অশিক্ষক কর্মী না-বলে শিক্ষাকর্মী বলাটাই যুক্তিযুক্ত।
ফাইল চিত্র।
নামে অনেক কিছু আসে-যায় বলেই মনে করছেন তাঁরা। শুধু মনে করা নয়, নিজেদের পেশা-পরিচিতির প্রচলিত নাম পরিবর্তনের দাবিতেও সরব হয়েছেন। স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, করণিক, ল্যাব অ্যাটেন্ড্যান্ট, গ্রন্থাগারিক ইত্যাদি পদকে একত্রে ‘অশিক্ষক কর্মী’ নামে কেন অভিহিত করা হবে, সেই প্রশ্ন তুলে এই অভিধার বিরোধিতায় নেমেছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল অ্যান্ড মাদ্রাসা ক্লার্কস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা। তাঁদের দাবি, অশিক্ষক নয়, তাঁদের শিক্ষাকর্মী নামে অভিহিত করা হোক। এই বিষয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ইতিমধ্যে চিঠিও দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর সিদ্ধান্ত।
ওই সংগঠনের বক্তব্য, সম্প্রতি সর্বশিক্ষা মিশনের একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যানারে লেখা হয় ‘অশিক্ষক কর্মচারীদের প্রশিক্ষণশালা’। তখনই ওই সংগঠনের তরফে তার প্রতিবাদ করা হয়। সংগঠনের সদস্যদের প্রশ্ন, সরকারি অনুষ্ঠানের ব্যানারে কী ভাবে ‘অশিক্ষক’ কথাটা লেখা হচ্ছে? কেনই বা লেখা হচ্ছে? দীপঙ্করবাবুর অভিযোগ, বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মহাবিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে শিক্ষক ব্যতীত সব কর্মচারীর বিষয়ে প্রায়শই এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কখনও ‘অশিক্ষক কর্মী’ কখনও বা ‘অশিক্ষক কর্মচারী’। সংগঠনের অভিযোগ, শুধু মুখেই যে বলা হয়, তা নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মুখপত্রে, পত্রিকায়, বিভিন্ন কাগজপত্রে, সরকারি আদেশনামায়, সরকারি অনুষ্ঠানের ব্যানারেও দীর্ঘকাল ধরে ওই নাম ব্যবহার করা হচ্ছে।
দীপঙ্করবাবুদের দাবি, অশিক্ষক নয়, শিক্ষাকর্মী শব্দটি এ বার নিয়ম করে চালু করা হোক। ওই সংগঠনের এক সদস্য জানান, সব পেশায় তাঁদের সহযোগীদের নির্দিষ্ট নাম রয়েছে। যেমন ডাক্তারদের সহকারী নার্স, উকিলদের মুহুরি। তা হলে শিক্ষকদের সহকারীদের অশিক্ষক বলা হবে কেন? অশিক্ষক কথাটা আপত্তিকর, অসম্মানজনক, মর্যাদাহানিকর।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, ইংরেজিতে ‘নন-টিচিং স্টাফ’-এর সরাসরি বাংলা করে অশিক্ষক কর্মী বলা হয়ে থাকে। যেটা একেবারেই ঠিক নয়। অশিক্ষক কর্মী কথাটা শ্রুতিকটু। অশিক্ষক কর্মী না-বলে শিক্ষাকর্মী বলাটাই যুক্তিযুক্ত।