লাঠি নিয়ে তাড়া। শুক্রবার গোবরডাঙা হিন্দু কলেজে। —নিজস্ব চিত্র
স্মারকলিপি দেওয়া ঘিরে টিএমসিপি-এবিভিপি সংঘর্ষে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গোবরডাঙা হিন্দু কলেজ। সংঘর্ষে দু’পক্ষের আহত অন্তত ১০ পড়ুয়া। ভাঙচুর করা হয়েছে ১৭টি বাইক। কলেজের একাধিক ঘরও ভাঙচুর করে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। উভয় পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে বহিরাগত এনে হামলার অভিযোগ তুলেছে। গোবরডাঙা ও হাবড়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উত্তেজনা রয়ে যাওয়ায় কলেজে পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
এবিভিপি-র অভিযোগ, কয়েক দিন আগে কলেজ চত্বরে তাদের এক সমর্থককে টিএমসিপি-র সমর্থককেরা মারধর করেন। বুধবার লিটন বিশ্বাস নামে আরও এক ছাত্র নেতাকে নিগ্রহ করা হয়। সেই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার এবিভিপি-র সমর্থক ছাত্রছাত্রীরা মিছিল করে অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, মিছিল কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতেই তাঁদের বাধা দেন টিএমসিপি-র সমর্থকরা। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে বচসা।
মুহূর্তের মধ্যেই সেই বচসা সংঘর্ষের চেহারা নিতে শুরু করে। দু’পক্ষই লাঠি-বাঁশ নিয়ে একে অপরের উপর হামলা চালায়। মারধর, ভাঙচুরে গোটা ক্যাম্পাস কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। চলতে থাকে যথেচ্ছ ভাঙচুর। দাঁড় করিয়ে রাখা বাইক-স্কুটার ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়। কলেজের বেশ কয়েকটি ঘরের জানালার কাচ, আসবাব গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের পাঠানো হয় হাবড়া হাসপাতালে। ঘটনার পর দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। শুরু হয়েছে মিছিল ও পালটা মিছিল। ক্যাম্পাসে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ বাহিনী। বারাসতের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।’’
দেখুন ভিডিয়ো:
আরও পড়ুন: নড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে এ বার মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে দিল্লিতে তলব
তবে এবিভিপি-র এই স্মারকলিপি জমা সংক্রান্ত কোনও আগাম তথ্য তাঁর কাছে ছিল না বলে দাবি করেছেন অধ্যক্ষ হরেকৃষ্ণ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে বলা হয়। ডেপুটেশনের কোনও আগাম তথ্য আমার কাছে ছিল না।’’
পুর প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য তথা তৃণমূল নেতা শঙ্কর দত্তের অভিযোগ, কলেজে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার নামে হামলা চালায় এবিভিপি ও বহিরাগতরা। তিনি বলেন, ‘‘ঐতিহ্যবাহী এই কলেজে এমন ঘটনা একেবারেই কাম্য নয়। বহিরাগতদের নিয়ে এসে এবিভিপি কলেজে তাণ্ডব চালিয়েছে। টিএমসিপি-র ৫-৬ জন ছাত্রনেতা গুরুতর আহত হয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: ভেন্টিলেশন থেকে বার করা হল বুদ্ধদেবকে, কথা বলছেন, তপনবাবুর খোঁজ করলেন
এবিভিপি-র জেলা সহ-সভাপতি উৎপল রায় যদিও গোটা ঘটনার দায় টিএমসিপি-র উপরে চাপিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কলেজে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে নৈরাজ্য এবং পেশিশক্তি জাহির করছে তৃণমূল। টিএমসিপি মারধর করার পরেই আমরা পাল্টা প্রতিরোধ করেছি। কলেজের কয়েক জন কর্মীও তৃণমূলের হয়ে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের নিগৃহীত করেছেন।’’