জখম: অংশুমান দোলুই। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
কলেজে এবিভিপি-র নতুন ইউনিট খুলেছে পনেরো দিনও হয়নি। এরই মধ্যে ধুন্ধুমার বাধল ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ে।
বৃহস্পতিবার সকালে এই গোলমালে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, যিনি আবার স্থানীয় বিধায়কের ছেলে, সেই অংশুমান ওরফে তুফান দোলুইকে মারধর করে নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এবিভিপি-র বিরুদ্ধে। পাল্টা মারে জখম হয়েছেন এবিভিপি-র কয়েক জন। হাত ভেঙেছে এবিভিপি নেতা সায়ন সেনগুপ্তের। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশও।
দুই ছাত্র সংগঠনের সাতজন জখম হয়ে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি ও নার্সিংহোমে ভর্তি। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “ঘাটাল কলেজে এবিভিপির কোনও সংগঠন নেই। দু’দিন হল ওদের দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে জিএসকে মারধর করল। এতে আর যাই হোক, ছাত্রদের সমর্থন ওরা পাবে না।” এবিভিপির জেলা সভাপতি স্বরূপকুমার মাইতির অবশ্য দাবি, “মারধরে এবিভিপি যুক্ত নয়।” জখম এবিভিপি নেতা সায়নও বলছেন, “আমরা প্রথমে কাউকে মারিনি। টিএমসিপি-র ছেলেরাই মারধর শুরু করে।” ঘটনায় দু’পক্ষই পুলিশে অভিযোগ করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।”
প্রথম বর্ষে ছাত্র ভর্তির সময় থেকেই ঘাটাল কলেজে মাথা তুলতে শুরু করে এবিভিপি। টিএমসিপির বিক্ষুদ্ধদের পাশাপাশি প্রথম বর্ষের বহু পড়ুয়া নাম লিখিয়েছেন গেরুয়া ছাত্র সংগঠনে। দিন পনেরো আগে এবিভিপি কলেজ ইউনিট খোলে। বুধবার বিকেলে, এবিভিপি অভিযোগ তোলে তাদের পোস্টার ও নরেন্দ্র মোদীর ফ্লেক্স ছিঁড়েছে টিএমসিপি-র ছেলেরা। রাতে ঘাটাল থানায় অভিযোগও জানায়। বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের বাইরে ছিল বিক্ষোভ কর্মসূচি। সকাল দশটা থেকেই কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হতে শুরু করেন। আসেন বিজেপির স্থানীয় নেতারাও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাড়ে এগারোটা নাগাদ টিএমসিপি-র ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তুফান বাইকে কলেজে আসছিলেন। এবিভিপি-র জমায়েতের সামনে বাইক থামাতেই এবিভিপি-র ছেলেদের সঙ্গে তাঁর বচসা বাধে। অভিযোগ, তখনই তুফানের উপর চড়াও হয়ে এবিভিপি-র ছেলেরা চড়-ঘুষি মেরে তাঁর নাক ফাটিয়ে দেয়। এরপরই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ক্যাম্পাস। এ দিন দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছিল। নাড়াজোল রাজ কলেজ ও চাঁইপাট কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্র এ বার ঘাটালে। পরীক্ষা চলাকালীনই লাঠি, রড নিয়ে মারধর শুরু হয়। তবে পরীক্ষা নিয়মমাফিকই হয়েছে। গোলমালের খবর পেয়ে কলেজে চলে আসেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝি, কাউন্সিলর উদয়শঙ্কর সিংহ রায়রা। পুলিশ ও নেতাদের উপস্থিতিতেই উল্টো দিকের বাজারে ভাঙচুর শুরু হয়। ঘন্টা আড়াই পরে ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।
ঘাটাল কলেজের টিচার ইনচার্জ লক্ষ্মীকান্ত রায় আবার শহরের তৃণমূল কাউন্সিলর। এ দিন চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি তাঁকে। আর তুফানের বাবা, ঘাটালের বিধায়ক তথা কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি শঙ্কর দোলই বলেন, “জনপ্রিয় ছাত্র নেতাকে মেরে এবিভিপি প্রচারে আসতে চাইছে। ছাত্ররাই এর জবাব দেবে।”
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।