সন্দেশখালির রাজবাড়ি এলাকায় নিহত তৃণমূল কর্মী কায়ুম মোল্লার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন সুজিত বসু, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্রেরা। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
কারা আক্রমণ করেছে, কত জন মারা গিয়েছেন, সে সব নিয়ে চাপানউতোর ছিলই। নিহত দুই কর্মীর দেহ সৎকারে নিয়ে যাওয়ার পথেও রবিবার টানাপড়েন বাধল বিজেপি ও পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে।
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে শনিবার সংঘর্ষে নিহত দুই কর্মী প্রদীপ মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডলের দেহ নিয়ে এ দিন বিকেলে কলকাতায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বিজেপি নেতারা। দফায় দফায় তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। প্রথম বার পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে গিয়েও পরে আবার বাধা পায় বিজেপির প্রতিনিধিদল। বচসা এবং বিক্ষোভের মধ্যেই মিনাখাঁয় রাস্তায় নিহতদের সৎকারের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হন বিজেপি সমর্থকদের একাংশ।
শেষমেশ অবশ্য অনড় পুলিশি বাধার মুখে দেহ সন্দেশখালির গ্রামেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিজেপি নেতারা জানিয়ে দেন, সারা রাজ্যে আজ, সোমবার তাঁরা ‘কালা দিবস’ পালন করবেন। আর বুধবার কলকাতায় হবে লালবাজার অভিমুখে মিছিল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, প্রতি পদক্ষেপে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করে রাজ্যে গোলমাল বাধাচ্ছে বিজেপি।
দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সায়ন্তন বসুদের নিয়ে বিজেপির প্রতিনিধিদল এ দিন গিয়েছিল সন্দেশখালি। সেই প্রতিনিধিদল ঠিক করেছিল, ময়না তদন্তের পরে বসিরহাট হাসপাতাল থেকে দু’টি দেহ নিয়ে তারা নিহত কর্মীদের গ্রামের বাড়িতে যাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা বদলে তারা রওনা হয় কলকাতার দিকে। মালঞ্চ বাজারের কছে দিলীপবাবুদের গাড়ি আটকায় পুলিশ। দিলীপবাবুরা জানান, কলকাতায় দেহ নিয়ে মিছিল হবে না, নিমতলায় শেষকৃত্য হবে। তাতেও পুলিশ রাজি হয়নি।
প্রায় আধঘণ্টা বচসা চলার পরে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে দেহ নিয়ে এগিয়ে যান দিলীপবাবুরা। কিন্তু ফের তাঁদের আটকানো হয় মিনাখাঁ থানার সামনে। রাস্তায় চারটে প্রিজন ভ্যান দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। সন্ধে পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন দিলীপবাবুরা।
তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশকে বিজেপি নেতারা জানান, দেহ দু’টি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গ্রামে। আর দিলীপবাবুরা ফেরেন কলকাতায়। রাহুল-লকেটদের অভিযোগ, নিহতদের পরিবার কলকাতায় দেহ নিয়ে যেতে চাইলেও তাঁদের ‘গণতান্ত্রিক অধিকারে’ বাধা দেওয়া হল। অথচ বাম জমানায় নেতাই-সহ একাধিক ঘটনায় তৃণমূল নেতারা কলকাতায় দেহ নিয়ে মিছিল করেছিলেন। তৃণমূলের পার্থবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘বিজেপির মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না!’’