প্রতীকী ছবি।
অভিযোগ উঠেছিল ভুয়ো নথি দিয়ে আবেদন করে প্রতিবন্ধী বৃত্তির টাকা আত্মসাতের। তার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার এক পার্শ্ব শিক্ষক ও এক জন কম্পিউটার ডেটা অপারেটরকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এই গ্রেফতারির ঘটনায় সেই রাত থেকেই উত্তাল হল উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি থানা এলাকা। জাতীয় সড়ক অবরোধ, থানা ঘেরাও, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় জড়িয়ে গেল রাজ্যের শাসকদলের নামও।
অভিযোগ উঠেছে, ধৃতদের ছাড়ানোর দাবিতে মঙ্গলবার রাতভর থানায় তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলেরই কিছু নেতা-কর্মী। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে জখম হন করণদিঘির আইসি সৌম্যজিৎ রায়-সহ ৯ পুলিশ কর্মী। পরে পুলিশ লাহুতাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মহম্মদ বদিরউদ্দিন-সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে।
ওই ঘটনার তদন্তে নেমে কিছু দিন আগে মাহাতাবুদ্দিন নামে এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, তাঁকে জেরা করেই ‘সাবধান হাই স্কুলের’ পার্শ্ব শিক্ষক মহম্মদ তাহসিন আলি এবং ‘রাঘবপুর হাই স্কুলের’ কম্পিউটার ডেটা অপারেটর মহম্মদ সাকির আলি নামে দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ধৃত দু’জনকে ছাড়াতে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক মহম্মদ ফাইজুল ও ব্লক যুব সভাপতি মহম্মদ কাউসারের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা করণদিঘি থানা ঘেরাও করেন। রাত ১২টা থেকে থানার সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। পুলিশের দাবি, রাত ৩টে নাগাদ পুলিশের উপর চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় র্যাফ।
এই ঘটনাকে ঘিরে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও পুলিশের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘ধৃতদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে ফাইজুল-সহ বেশ কয়েক জন পুলিশের উপর হামলা চালায়। ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’’ যদিও ফাইজুল বলেন, ‘‘বৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ওই দু’জনকে পুলিশ অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করেছে। তা ছাড়া করণদিঘিতে সম্প্রতি চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। আমরা সে সবের প্রতিবাদ করতেই গিয়েছিলাম।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি দলীয় স্তরে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’