Dearness allowance

বকেয়া ডিএ-র দাবি ‘কাল্পনিক’, সওয়াল রাজ্যের

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নবান্ন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৪১
Share:

সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।

বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দিতে গেলে রাজ্যের কোষাগারে ৪১,৭৭০ কোটি টাকার ‘বোঝা’ চাপবে। এই বোঝা ‘অস্বাভাবিক রকমের বিরাট’ মাপের। তার চাপে পিঠ নুইয়ে পড়বে। তা ছাড়া রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবি পুরোটাই ‘কাল্পনিক, তথ্যভিত্তিক নয়’ বলে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সুপ্রিম কোর্টে জোরালো সওয়াল করল। রাজ্যের যুক্তি, বছরে দু’বার করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিষয়টি কোনও নিয়মে নেই। ফলে মহার্ঘ ভাতা বকেয়া থাকার যুক্তিটাই ‘কল্পনাশ্রয়ী’।

Advertisement

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নবান্ন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে রাজ্যের কর্মীদের ডিএ-র ফারাক মিটিয়ে দেওয়া নিয়ে মামলা শুরু হয়েছিল। এই ফারাক এখন ৩৫%। আজ রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছেন, সরকারি কর্মীরা বাস্তবে ১২৫% ডিএ পাচ্ছেন। বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে তা বেতনের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার পরেও ডিএ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, ১৪ ডিসেম্বর এ বিষয়ে শুনানি হবে। তার আগে কর্মচারী সংগঠনগুলির বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা দিতে হবে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিচারপতি মাহেশ্বরী রাজ্যের সওয়াল শুনে তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকারের বোঝা বাড়বে, সে কথা ঠিক। কিন্তু ভারসাম্যেরও দরকার রয়েছে।” কী ভাবে রাজ্য ৪১,৭৭০ কোটি টাকার হিসেবে পৌঁছল, তা-ও দেখতে চান তিনি। মন্তব্য করেন, “ডিএ মোটামুটি আইনি অধিকারের পর্যায়েই চলে গিয়েছে।” রাজ্য যুক্তি দিয়েছে, হাই কোর্ট ডিএ-কে ‘আইনত রূপায়ণযোগ্য অধিকার’ বলে তকমা দিয়েছে। তা সুপ্রিম কোর্টের অন্তত ১০টি রায়ের বিপরীত। মনু সিঙ্ঘভি বলেন, “রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কি ইচ্ছে মতো, পছন্দের হার অনুযায়ী, পছন্দমতো সময় অনুযায়ী ডিএ পেতে পারেন?” কর্মচারী সংগঠনের হয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সুপ্রিম কোর্টে বলেন, ডিএ বেতনেরই অংশ। এর আগে রাজ্যের বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মীদেরও আদালতের নির্দেশে ডিএ দিতে হয়েছে। আর একটি কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী মীনাক্ষী অরোরা বলেন, বছরে দু’বার না দিক, রাজ্য সরকার নিজের সূত্র মেনেই মূল্যবৃদ্ধির সূচক অনুযায়ী কর্মচারীদের প্রাপ্য ডিএ দিক। রাজ্য সরকার প্রাপ্য ডিএ দিচ্ছে তিন থেকে চার বছর পরে।

Advertisement

হাই কোর্ট ডিএ মেটানোর নির্দেশ দেওয়ার পরেও রাজ্য সরকার তা পালন না-করায় একাধিক আদালত অবমাননার মামলা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টকে আপাতত সেই মামলার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে বলেছে। ‘এটা ছোট বিষয়’ মন্তব্য করে আজ বিচারপতি মাহেশ্বরী ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement