এনামুল হক। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার ছাড়াও তাঁরা কালো টাকা সাদা করতেন এবং এই মুহূর্তে তাঁরা পলাতক বলে সিআইডি-র অভিযোগ। এই অবস্থায় গরু পাচারের মামলায় সিবিআইয়ের হাতে ধৃত এনামুল হকের সেই তিন ভাগ্নের নামে আদালতে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করলেন গোয়েন্দারা। চার্জশিটে এনামুলের সঙ্গী, ইতিমধ্যে ধৃত জেনারুল শেখেরও নাম আছে। বৃহস্পতিবার জঙ্গিপুর আদালতে গরু পাচার কাণ্ডে ওই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় সিআইডি। চার্জশিটে কমবেশি ৭০ জন সাক্ষীর নাম রয়েছে। এনামুল এখন আছেন তিহাড় জেলে।
এনামুল গ্রেফতার হওয়ার পরে কী ভাবে রাতারাতি এনামুলের ভাগ্নেদের সংস্থা জেএইচএম গরু পাচারের টাকা অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছিল, তা-ও জানানো হয়েছে চার্জশিটে। ওই সংস্থার তিন মালিক এনামুলের তিন ভাগ্নে— জাহাঙ্গির আলম, হুমায়ুন কবির ও মেহেদি হাসান কালো টাকা সাদা করার কারবারে যুক্ত বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ। সিআইডি সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে ২০১৯ সালের পুরনো একটি মামলার তদন্ত গত জুলাইয়ে নতুন করে শুরু করেন গোয়েন্দারা। তখনই এনামুলের তিন ভাগ্নের কথা উঠে আসে। সিআইডি ৩ সেপ্টেম্বর জেনারুলকে গ্রেফতার করে। চার্জশিটে তদন্তকারীদের অভিযোগ, জেনারুল বাজেয়াপ্ত করা গরুকে মৃত দেখিয়ে খোঁয়াড় থেকে তাদের বাংলাদেশে পাচার করে দিতেন। এবং পুরো পাচার পর্ব চলত এনামুলের ভাগ্নেদের নির্দেশে।
সিআইডি জানিয়েছে, তদন্তকারী অফিসার অরিজিৎ ভট্টাচার্যের পেশ করা চার্জশিটে এনামুলের তিন ভাগ্নের সঙ্গে নাম রয়েছে তাঁদের সংস্থারও। তদন্তকারীদের দাবি, ওই সংস্থার নামে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা আছে। আমদানি-রফতানির ব্যবসা ছাড়াও লজিসটিক্স এবং চালকলের ব্যবসা রয়েছে ওই সংস্থার নামে। তল্লাশি চালানোর পরে ওই সংস্থার কলকাতার অফিস সিল করে দিয়েছে সিআইডি। একই সঙ্গে সংস্থার মালিকানাধীন হোটেল এবং চালকলে হানা দিয়ে প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন গোয়েন্দারা। সেই সব নথি থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গরুর ব্যবসার টাকা বিভিন্ন সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছে, কোটি কোটি টাকা লগ্নি করা হয় বিদেশেও। এমনকি জেএইচএম গ্রুপের অধীনে প্রায় ১০টি সংস্থার ট্রাস্টের মাধ্যমেও টাকা সরানো হয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ওই গ্রুপের ২০টির বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই তিন খোঁয়াড়-মালিক জাহাঙ্গির আলম, সেন্টু শেখ ও সেলিম শেখের নামে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। পলাতকের তালিকায় নাম রয়েছে আলমেরও। সেন্টু ও সেলিম এখন জামিনে মুক্ত।