কল্যাণী এমসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ডেকে পাঠানো হল অধিকর্তা রামজি সিংহকে। —নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি মামলা নিয়ে তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে শোরগোলের মধ্যেই এ বার ‘সক্রিয়’ রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি-ও। কল্যাণী এমসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ডেকে পাঠানো হল কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তাকে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভবানী ভবনে তদন্তকারীদের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে কল্যাণী এমসের ডিরেক্টর রামজি সিংহকে। এ বিষয়ে রামজির বক্তব্য, কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের বদনাম করার জন্য এ সব করা হচ্ছে।
সিআইডি সূত্রে খবর, রামজিকে সিআইডির তরফে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডাকা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। এ ব্যাপারে রামজির সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি সেই চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ভাল কাজ হচ্ছে বলেই চক্রান্ত হচ্ছে! পরিকল্পনা করে চক্রান্ত করা হচ্ছে এমসের বিরুদ্ধে। অধিকর্তার কথায়, ‘‘এমসের বদনাম করার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের ভাল কাজকে আটকে দেওয়ার নোংরা চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়।’’ এর যথাযথ জবাব দেওয়া হবে বলেও ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছেন রামজি।
কল্যাণী এমসে বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থায় চাকরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বছর মে মাসে কল্যাণী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার এক যুবক। প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় তখন মামলা রুজু হয়। তাতে অনেকের নাম জড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা, তাঁর কন্যা মৈত্রী দানা, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাস। বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূ অনুসূয়া ঘোষ এবং নীলাদ্রিশেখর দানার মেয়ে মৈত্রী দানা এমসে ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে কাজ পেয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, দুই বিধায়ক নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। ওই মামলার তদন্তভার সিআইডি নেয়। এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে চার বিজেপি বিধায়ক-সহ আট জনের বিরুদ্ধে।