Jogesh Chandra Chaudhuri Law College

তদন্তে নেমে আইন কলেজে সিআইডি

সরকারি ভাবে সিআইডি এই তদন্ত নিয়ে কিছুই বলতে চায়নি। সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বেরনোর সময় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি অধ্যক্ষাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৪০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজের আর্থিক অনিয়ম ও নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নামল সিআইডি। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলার দায়িত্ব সিআইডিকে দিয়েছেন। রবিবার দুপুরে সিআইডি-র স্পেশাল সুপারিনটেন্ডেন্ট অনীশ সরকার এবংতদন্তকারী অফিসার অতীশ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি দল ওই কলেজে যায়। ঘণ্টা ছয়েক তাঁরা ভিতরেই ছিলেন। সূত্রের খবর, কলেজে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষা সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েনকার সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করেছেন তাঁরা। তবে সরকারি ভাবে সিআইডি এই তদন্ত নিয়ে কিছুই বলতে চায়নি। সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বেরনোর সময় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি অধ্যক্ষাও। তবে একটি সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যে অধ্যক্ষার বাড়িতে গিয়েও দু’দিন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, কলেজে আর্থিক অনিয়ম এবং নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সুনন্দার বিরুদ্ধে ওই কলেজের পরিচালন সমিতির এক প্রাক্তন সদস্য ২০১৮ সালে চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে চারু মার্কেট থানা মামলা রুজু করেনি। তার পরে ওই অভিযোগকারী নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হন এবং কোর্টের নির্দেশেই মামলা দায়ের করে পুলিশ। তদন্তভারদেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের জালিয়াতি দমন শাখাকে। অভিযোগ, সেখানেও তদন্ত ঠিক মতো হয়নি। কলকাতা পুলিশ তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিলেও নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগকারীকে সে ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। সম্প্রতি ওই কলেজের ছাত্র সংসদের এক প্রাক্তন পদাধিকারীর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আবার সামনে আসে। ছাত্র সংসদের প্রাক্তন নেতার মামলাটি খারিজ করে দিলেও এই পুরনো মামলার তদন্ত সিআইডিকে ফের করতে বলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, স্কুল নিয়োগ দুর্নীতিতে একের পর এক সিবিআইতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তবে এই মামলায় তিনি রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী সংস্থার উপরেই আস্থা রেখেছেন। নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘এটি স্থানীয় মামলা। এতে সিবিআই তদন্তের দরকার নেই।’’ সব তদন্তকারী সংস্থার উপরেই যে তাঁর ‘আস্থা’ আছে সে কথাও স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে ছিলেন বিচারপতি।

Advertisement

সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার সময়েই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে ছিলেন যে ১৭ অক্টোবর এই মামলায় প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে হবে সিআইডিকে। আগামিকাল, মঙ্গলবার সেই রিপোর্ট দেওয়ার আগে তাই এ দিন প্রাথমিক নথিপত্র গুছিয়ে নিতে চেয়েছেসিআইডি। পুলিশের একাংশের দাবি, এই মামলার মধ্যে প্রভাবশালী যোগ থাকতে পারে। আবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের চাপও আছে। তাই সিআইডির তদন্তকারীরা সাবধানী পা ফেলতে চাইছেন। যদিও আদালতে মামলার শুনানিতে রাজ্যের কৌঁসুলিরা স্পষ্টই জানিয়েছিলেন যে তাঁরা এ ব্যাপারে আগেই তদন্ত করে পদক্ষেপ করতে বলেছিলেন। কিন্তু কলেজ সার্ভিস কমিশন বা কলেজের পরিচালন সমিতি সেই মতো পদক্ষেপ করেননি।

শিক্ষা মহলের একাংশের বক্তব্য, এই কলেজে আগে অধ্যক্ষ ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তিনি বর্তমানে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি। মানিক যে সময়ে এই কলেজে যোগ দেন তখনকলেজটি বেসরকারি ছিল। পরবর্তী কালে রাজ্য সরকারকলেজটি অধিগ্রহণ করে। অভিযোগ উঠেছে যে মানিকের হাত ধরেই অধ্যক্ষা এবং আরও এক সহকারী অধ্যাপিকার নিয়োগ হয়েছিল। তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসি-রনিয়ম মানা হয়নি।বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রথমে দু’জনকেই পদ থেকে অপসারণ করেছিলেন। পরে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে তাঁরা পদ ফিরে পান। অধ্যক্ষা এবং ওই সহকারী অধ্যাপিকার আইনজীবীরা কোর্টে দাবি করেছিলেন যে তাঁদের মক্কেলরা ইউজিসি নির্ধারিত যোগ্যতা প্রমাণ করেই চাকরি পেয়েছিলেন। অধ্যক্ষ পদে বসার ক্ষেত্রে যে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন তাও সুনন্দার আছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement