ফাইল চিত্র
তাঁকে খুনের সময় থেকেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছিল। টিটাগড়ের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল খুনের চার্জশিট পেশের পরে সেই তরজা নতুন মাত্রা পেল। শুক্রবার ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে এই মামলার চার্জশিট পেশ করে সিআইডি। চার্জশিটে মণীশ খুনে ধৃতদের পাশাপাশি সন্দেহভাজন হিসেবে ছ’জনের নাম রাখা হয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল নেতা তথা টিটাগড় এবং ব্যারাকপুরের বিদায়ী পুর প্রধানদের নামও রয়েছে।
বিজেপি দাবি তুলেছে, চার্জশিটে সন্দেহভাজন হিসেবে কারও নাম রাখা বেআইনি। ব্যারাকপুর আদালতের আইনজীবী তথা বিজেপির জেলা সভাপতি রবীন ভট্টাচার্য বলেন, “যদি তাঁরা এই খুনে জড়িত থাকেন, তা হলে তাঁদের নাম থাকবে। নতুবা তাঁদের নাম বাদ যাবে। চার্জশিটে নাম থাকলে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে ওয়ারেন্ট চাওয়া হয়নি?” চার্জশিটকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আজ, শনিবার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
গত ৪ অক্টোবর রাতে টিটাগড়ে দলীয় অফিসের সামনে গাড়ি থেকে নামার পরে বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লকে খুব কাছ থেকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় দুষ্কৃতীরা। তাঁর দেহ থেকে মোট ১৪টি গুলি মিলেছিল। খুনের পরের দিনই ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কাছ থেকে মামলা সিআইডি-র হাতে দেওয়া হয়। খুনের ঘটনায় বিহার ও পঞ্জাবের লুধিয়ানা থেকে চার জন ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করে সিআইডি। মণীশের পরিবার ব্যারাকপুর ও টিটাগড়ের বিদায়ী পুর প্রধান যথাক্রমে উত্তম দাস ও প্রশান্ত চৌধুরী-সহ কয়েক জন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল।
আরও পড়ুন: টিকার ছাড়পত্র তো পাওয়া গেল, কিন্তু দুয়ারে দুয়ারে টিকা আসবে কবে?
এই ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ব্যক্তিগত শত্রুতা এবং এলাকার দখল নিয়ে গোলমালের জেরে ওই বিজেপি নেতাকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। ধৃত ১০ জনের মধ্যে ছ’জন ষড়যন্ত্রকারী ও চার জন ভাড়াটে খুনি হিসেবে ওই খুনের ঘটনায় জড়িত বলে চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে। মণীশকে খুন করতে ভিন্ রাজ্য থেকে ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করা হয়েছিল বলে দাবি তদন্তকারী সংস্থার। বিহারের বাসিন্দা কয়েক জন ভাড়াটে খুনিকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বিহারের জেলবন্দি এক মাফিয়ার নির্দেশেই এই খুনের ঘটনা বলে সিআইডি-র দাবি। মণীশের বিরুদ্ধে স্থানীয় কয়েক জন দুষ্কৃতীর সঙ্গে যোগসাজশ করে ওই খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলে চার্জশিটে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: মাথায় রুপোর মুকুট, বিজেপি-কে পগারপার করার হুঙ্কার অনুব্রতর
আইডি জানিয়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়া এখনও চলছে। আরও কয়েক জনের খোঁজ চলছে। হারমান মণ্ডল নামে এক অভিযুক্তের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রশান্ত চৌধুরী, উত্তম দাস, রাজেন্দ্র যাদব, ভোলাপ্রসাদ সাউ, রুনু পাল, বাঁটুলের নাম রাখা হয়েছে সন্দেহভাজনের তালিকায়। সিআইডি অভিযুক্তদের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ প্রথম থেকেই এই খুনে তৃণমূলের যোগ থাকার অভিযোগ করেছিলেন। উত্তম এ দিন বলেন, “আইন আইনের পথেই চলবে। আমাদের সঙ্গে এই খুনের কোনও যোগ নেই। বিজেপি নেতৃত্ব রাজনৈতিক কারণে আমাদের নাম ঢুকিয়েছে। আমরা আইনি পথেই এর মোকাবিলা করব।” একই কথা বলছেন প্রশান্তও।