কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
রোজভ্যালি-কাণ্ডে বেশ কিছুদিন তদন্ত ‘থমকে’ থাকার পর হঠাৎ নড়েচড়ে বসল সিবিআই। শুক্রবার কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তীকে চিটফান্ডের বিষয়ে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। রাজ্যে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির তুলনায়, তৃণমূল কংগ্রস প্রতিবাদের ঝাঁঝ কয়েকগুণ বাড়িয়েছে। খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। কেন্দ্রেকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাজ্যে সিএএ এবং এনআরসি হতে দেবেন না।
এরই মধ্যে রাজ্যে নতুন করে চিটফান্ড তদন্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা শুরু হওয়ায় ‘চাপ’-এ ফেলার কৌশল নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছে তৃণমূল শিবির। অবশ্য এর আগেও তৃণমূল সমর্থকেরা এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন। মমতার নির্দেশে সিএএ নিয়ে তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা পথে নেমে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার রোজভ্যালি-সহ বিভিন্ন চিটফান্ড-কাণ্ডে অভিযুক্তও।
তৃণমূল শিবিরের তরফে আশঙ্কা করা হচ্ছে, নতুন করে ফের নেতাদের তলব করা হতে পারে চিটফান্ড-কাণ্ডে। সে কারণেই ২০১০ সালে চিটফান্ড নিয়ে কলকাতা পুলিশকে দেওয়া সেবির একটি চিঠির বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে সিবিআই। ওই চিঠির বিষয়ে জানতেই এ দিন গৌতমবাবুকে তবল করা হয়েছিল বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
গৌতমমোহন শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ তিনি সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন। ২০১০ সালে সেবি যখন চিঠি দিয়েছিল, তখন কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলেন তিনি। সেবি চিঠি দিয়ে কলকাতা পুলিশের কাছে কী জানিয়েছিল? চিটফান্ডগুলির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে বলে ছিল কি না? তদন্ত শুরু হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে এ দিন তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়।
এ বিষয়ে সিবিআইয়ের তরফে কোনও মন্তব্য করা না হলেও, জিজ্ঞাসাবাদের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গৌতমবাবু বলেন, “এটা সিবিআইয়ের তদন্তের ব্যপার। আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। সেই সময় কী তদন্ত হয়েছিল, জানতে চেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ২০১১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত, আমি যতদিন কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলাম তত দিন কোনও এফআইআর হয়নি বলেই জানি। সে সব বিষয়ে আমি জানিয়েছি। আবার ডাকলে তদন্তে সহযোগিতা করতে কোনও অসুবিধা নেই।”