পিছমোড়া শিশু উদ্ধার, বিক্ষোভ হোমের বিরুদ্ধে

ফের হুগলির হোমে আবাসিক নির্যাতনের ঘটনা সামনে এল। গঙ্গা-লাগোয়া নিকাশি খালের পাড় থেকে একটি হোমের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুকে হাত-বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে চন্দননগরের গোস্বামীঘাট এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২৩
Share:

হোমের সামনে বিক্ষোভ বাসিন্দাদের। শুক্রবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি।

ফের হুগলির হোমে আবাসিক নির্যাতনের ঘটনা সামনে এল। গঙ্গা-লাগোয়া নিকাশি খালের পাড় থেকে একটি হোমের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুকে হাত-বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে চন্দননগরের গোস্বামীঘাট এলাকায়। ঘটনাটি জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা ওই হোমে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখান। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই হোমের এক কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

যদিও রাত পর্যন্ত ওই হোমের ঘটনার কথা জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের কর্তারা আদৌ জানতেন না। জেলা সমাজকল্যান আধিকারিক কাজল দত্ত বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও ঘটনার কথা জানা নেই।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, চন্দননগরের গোস্বামী ঘাট এলাকায় একটি মানসিক প্রতিবন্ধীদের হোমের আবাসিক বছর দশেকের ওই শিশু। এ দিন দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দা রত্না চক্রবর্তী খালের ধার দিয়ে যাওয়ার সময় গোঙানির আওয়াজ পান। তাঁর চোখে পড়ে, একটি শিশু অর্ধেক জলের মধ্যে, কাদায় আটকে ছটফট করছে। তাঁর চিৎকারে বাসিন্দারা ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।

Advertisement

রত্নাদেবী বলেন, ‘‘অমানবিক ভাবে শিশুটির হাত পিছমোড়া করে বাঁধা ছিল। গঙ্গার জোয়ারের জল খালে ঢুকলে ওকে ভাসিয়ে নিয়ে চলে যেত।’’ হোমের সেক্রেটারি নির্মল পাল বলেন, ‘‘শিশুটি খুব দুরন্ত। তাই মাঝেমধ্যে তার হাত বেঁধে রাখা হত, যাতে সে কোথাও চলে না যায়।’’ এদিন সে কী করে বাইরে বেরিয়ে গেল, সেটা খতিয়ে দেখে কর্তব্যরত সেবিকাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানান তিনি।

ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা অবশ্য শিশুটিকে উদ্ধার করে হোমে দেননি। নিজেরাই তার গা-হাত-পা ধুইয়ে অন্য জামা-কাপড় পরিয়ে দেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছায়। হোম কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শিশুর পরিবারের সদস্যদের ফোন নম্বর নিয়ে পুলিশ বাড়িতে খবর দেয়।

এ দিন উদ্ধার-হওয়া শিশুটির বাবা ত্রিবেণীর বাসিন্দা। গত জানুয়ারি মাসে শিশুটিকে ওই হোমে দিয়ে যান তিনি। কিছুটা ভাল হলে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গেলেও, ফের চলতি মাসে তাকে হোমে ফিরিয়ে আনা হয়। তার মা প্রায়ই দেখা করতে আসতেন। এদিনের ঘটনার পর ছেলেকে আর সেখানে রাখার ইচ্ছা নেই বাবা-মায়ের। ওই শিশুর বাবা চন্দননগর থানায় কর্তব্যে গাফিলতির জন্য হোমের প্রশিক্ষক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়-সহ পাঁচ মহিলা সেবিকার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এদিন সন্ধ্যায় বিশ্বজিৎবাবুকে গ্রেফতার করে। বাকিদের খোঁজ চলছে। আরও ১৬জন আবাসিক রয়েছে ওই হোমে।

এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে হোমের সামনে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, এই হোমে শিশুদের ঠিকমতো দেখাশোনা করা হয় না। পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তাঁরা ফিরে যান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement