ধৃত: টানা জেরার পরে গ্রেফতার সাস্মিতা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
যাঁদের কাঁধে শিশুদের সুরক্ষার দায়িত্ব, শিশু বিক্রির দায়ে গ্রেফতার হলেন তাঁরাই।
গত শুক্রবার দার্জিলিঙের শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়। চন্দনা চক্রবর্তীর জলপাইগুড়ির হোমের অনিয়মের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ। একই অভিযোগে তিন দিন পরে গ্রেফতার মৃণালবাবুর স্ত্রী, জলপাইগুড়ির শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সাস্মিতা ঘোষও। সাস্মিতার অবশ্য দাবি, জেলা প্রশাসনের কয়েক জন কর্তাকে বাঁচাতেই তাঁকে ‘বলি’ দেওয়া হয়েছে।
তবে সোমবার শিলিগুড়ির পিনটেল ভিলেজে দিনভর জেরার পর সন্ধ্যা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তিন বছর ধরে চন্দনার হোমে শিশু বিক্রি-সহ একের পর এক অনিয়ম চলছিল বলে অভিযোগ। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, তার পরেও ডিসিপিও হিসেবে সাস্মিতা পদক্ষেপ করেননি। শুধু তাই নয়, ১৭টি শিশুকে ‘বিক্রি’র ক্ষেত্রেও তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে শংসাপত্র দেন বলে অভিযোগ। সিআইডির এক কর্তা বলেন, ‘‘স্বামী-স্ত্রী মিলে চন্দনার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে নানা কাজকর্ম করছেন। পুরোটাই মোটা টাকার বিনিময়ে।’’
সাস্মিতার অবশ্য যুক্তি, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জলপাইগুড়িতে বৈধ সিডব্লিউসি ছিল না। ২০১৪ সালে অতিরিক্ত জেলাশাসকের নেতৃত্বে অ্যাডহক কমিটি তৈরি হয়৷ কমিটিতে অতিরিক্ত জেলাশাসক ছাড়াও জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক, ডিএসপি (ডিইবি), আইন আধিকারিক ও তিনি ছিলেন৷ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এঁদের মধ্যে আমার ক্ষমতা ছিল সব থেকে কম। অথচ, আমার উপরেই সব দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হল।’’ তবে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভগত বলেন, ‘‘বেশ কিছু ঘটনায় আমরা শুধু সাস্মিতার সই-ই পেয়েছি৷ অ্যাডহক কমিটির বাকি সদস্যদের সই পাওয়া যায়নি৷’’