ফাইল ছবি
কিছু জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গে সংগঠিত ক্ষেত্রে শিশুশ্রম কমলেও হোটেল, ধাবা বা ছোট কারখানায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানালেন রাজ্যের শ্রম দফতরের সচিব বরুণকুমার রায়। সোমবার ইউনিসেফ এবং পশ্চিমবঙ্গ শ্রম দফতরের উদ্যোগে শিশুশ্রম রোধে রাজ্য স্তরের আন্তর্বিভাগীয় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সরকারি কর্তারা মানছেন, নির্মাণ শিল্প, বাজি কারখানা, কার্পেট শিল্পে শিশু শ্রমিক কমলেও করোনাকালে সার্বিক ভাবে শিশুশ্রম বেড়েছে। তার উপরে শিশু শ্রমিক পুনর্বাসনে কেন্দ্রীয় সরকারের স্কুলের সংযুক্ত পাঠ্যক্রম ব্যবস্থাটিও আগামী এক বছরে উঠে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনটা ঘটলে শিশুশ্রম মোকাবিলার কাজ আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে মনে করেন বরুণবাবু।
ইউনিসেফে ভারতের শিশু সুরক্ষা প্রধান সোলেদাদ এররেরো-র আক্ষেপ, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে শিশুশ্রম লোপের সঙ্কল্প করেছিল। কিন্তু বাস্তবে গোটা বিশ্বের ১৬ শতাংশ শিশু শ্রমিকই ভারতের।’’ তবে তাঁর মতে, ‘‘সমস্যা থাকলেও কন্যাশ্রী, দুয়ারে সরকারের মতো প্রকল্পের মাধ্যমে ঠিক পথেই লড়ছে পশ্চিমবঙ্গ।’’
শিক্ষা, সমাজকল্যাণ-সহ বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী, আধিকারিকদের নিয়ে সম্মিলিত বৈঠকে স্কুলছুটের প্রবণতার বাড়বাড়ন্তের ফলেও শিশুশ্রমের বিপদের কথা উঠে আসে।
ইউনিসেফ-কর্তাদের মতে, প্রতিটি স্কুলছুট শিশুই সম্ভাব্য শিশু শ্রমিক। ভারতে মাত্র ৪০ শতাংশ শিশু করোনাকালের অনলাইন শিক্ষায় তাল মেলাতে পেরেছে। সরকারি কর্তাদের হিসেবে, এ রাজ্যে কমবেশি তিন লক্ষ পড়ুয়া মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুট হচ্ছে।
শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী গৃহহিংসার সঙ্গে শিশুশ্রমের যোগের কথাও তুলে ধরেন। পারিবারিক অশান্তির জেরে ঘরছাড়া ছোটরা বাধ্য হয়ে রোজগারের রাস্তা বেছে নেয়। ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গের প্রধান কর্মকর্তা মহম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘‘দরকারে গ্রাম স্তরে প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ধরে প্রতিটি পরিবারে শিশুশ্রম বা বাল্য বিবাহ রোধে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।