মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —পি টি আই
ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা রবিবারই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিদেবী জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সেখানে তিনি জেলাশাসকদের বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দ্রুত পাঠাতে বলেন। ওই তালিকা হাতে পেলেই বুধবার তাঁদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য কলকাতায় ডাকা হবে।
বৈঠক শেষ হতেই এ বিষয়ে উদ্যোগী হয় জেলা প্রশাসন। সোমবার রাতের মধ্যেই বেশ কয়েক জন হতাহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আর্থিক সাহায্য নেওয়ার কথা বলা হয়। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে তা নবান্নে পাঠাবে। ওই তালিকা হাতে পাওয়ার পরেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তালিকা হাতে পাওয়ার আগে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তুতি পর্ব নবান্নে শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই খবর।
বুধবার বিকেলে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে মমতা দুর্গতদের হাতে চেক তুলে দেবেন। উল্লেখ্য, সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দার্জিলিং সফর বাতিল করেন। ৩ দিনের সফরে সোমবারই দার্জিলিঙের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল তাঁর। নবান্নের তরফে সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর সফর বাতিলের কথা জানানো হয়। পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রেল দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে মঙ্গলবার আবারও ওড়িশা যাবেন তিনি। সন্ধ্যাতেই তাঁর কলকাতায় ফিরে আসার কথা। বুধবার নেতাজি ইন্ডোরের সভায় ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেবেন তিনি। বালেশ্বরে কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় বাংলার ৬২ জন মারা গিয়েছেন। এখনও বহু মৃতদেহ শনাক্ত করা যায়নি। বাংলার অনেকে এখনও নিখোঁজ।
রবিবার আর্থিক সহায়তা ঘোষণার পর নবান্নে মমতা বলেছিলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যের ৬২ জন মারা গিয়েছেন। আমরা তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেব। মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দেব। গুরুতর আহতদের দেওয়া হবে ১ লক্ষ করে। অল্প আহতদের ২৫ হাজার করে দেওয়া হবে। আগামী ৩ মাস তাঁদের রক্ষণাবেক্ষণ করবে সরকার।’’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘এই ঘটনায় যাঁরা সামান্য আহত বা গুরুতর আহত হয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের পাশে যেমন রাজ্য সরকার থাকবে, তেমনই যাঁরা এই ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছেন, তাঁরা এখনও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। মানসিক অবস্থা ভাল নয়। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কয়েক মাস সময় লাগবে। সরকার আগামী ৩ মাস তাঁদেরও পাশে থেকে সাহায্য করবে। আপাতত তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তার পর ৩ মাস তাঁদের ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। সঙ্গে সরকারের তরফে সাহায্য বাবদ চাল, ডাল ইত্যাদি জিনিস তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।’’ পাশাপাশি, যাঁরা কাজ চাইবেন, প্রয়োজনে তাঁদের ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। তবে কেন নিহতদের পরিবারকে কেন্দ্রীয় সরকার চাকরি দিল না তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন তিনি।