Mamata Banerjee on DA

ডিএ-প্রশ্নে ক্রমে সুর চড়াচ্ছে বিরোধী কর্মচারী ইউনিয়ন, জবাব দিতে পাল্টা মঞ্চে হাজির হতে পারেন মমতা

সব পরিকল্পনামাফিক চললে জানুয়ারি মাসে নেতাজি ইন্ডোরে শাসকদল সমর্থিত পশ্চিমবঙ্গ কর্মচারী ফেডারেশনের এক সভা হবে। সেখানে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:০১
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

শিয়রে লোকসভা ভোট! সেই সুযোগে মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে সুর চড়াতে শুরু করেছে একে একে বিভিন্ন রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন। সেই আবহেই ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের ‘অবস্থান’ স্পষ্ট করতে পাল্টা শাসকদলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সভায় হাজির হয়ে জবাব দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব পরিকল্পনামাফিক চললে জানুয়ারি মাসে নেতাজি ইন্ডোরে শাসকদল সমর্থিত পশ্চিমবঙ্গ কর্মচারী ফেডারেশনের এক সভা হবে। সেখানে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। মনে করা হচ্ছে, সেই মঞ্চ থেকেই তিনি ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দেবেন।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ঘনিষ্ঠমহলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, তাঁরা আশা করছেন ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানিতে ‘ইতিবাচক’ কোনও রায় পাওয়া যেতে পারে। তাই সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার আগেই রাজ্য সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারে বলে মনে করছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। সে ক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসের পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কর্মচারী ফেডারেশনের সভাকে ঘোষণাস্থল হিসাবে বেছে নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

ইতিমধ্যে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথমঞ্চ ডিএ-র দাবিতে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাস জুড়ে একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছে। শহিদ মিনারে তাদের অবস্থান চলার পাশাপাশি চলতি মাসের ১৯ তারিখ থেকে তাঁরা রাজ্য সরকারের সদর দফতর নবান্নের সমানে ধর্না কর্মসূচি শুরু করবেন। সেই কর্মসূচি চলবে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পাশাপাশি, ডিএ-র দাবিতেই জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে কলকাতায় মহামিছিলের আয়োজন করা হবে। সেই মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থী ও চাকরিজীবী মঞ্চের নেতৃত্বকে। ওই দিন হাওড়া, শিয়ালদহ এবং হাজরা থেকে তিনটি মিছিল মিলিত হবে শহিদ মিনারে। সেখানে আয়োজিত হবে এক প্রতিবাদসভা। জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে ধর্মঘট কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। তিন দিন অর্থাৎ ৭২ ঘণ্টা ধরে ওই কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন মঞ্চের নেতারা। তাঁরা ঘোষণা করেছেন, ওই তিন দিন সরকারি অফিস-স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করবেন সরকারি কর্মচারীরা। আবার বামপন্থী সরকারি শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গীয় ‘শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মচারী সমিতি’ ৪০ শতাংশ ডিএ-র দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদন করেছে নবান্নে। এমতাবস্থায় শাসকদলের কর্মচারী ইউনিয়ন পাল্টা সভা করে বিরোধী সংগঠনগুলিকে ‘জবাব’ দিতে চাইছে।

Advertisement

এ বছর বাজেট অধিবেশনের সময় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৩ শতাংশ ডিএ-র ঘোষণা করেছিলেন। মনে করা হচ্ছে, আগামী বছর সেই ধরনেরই ঘোষণা আবার করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে নেতাজি ইন্ডোরেই তৃণমূল কর্মচারী ফেডারেশনের সভা থেকে ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালুর ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী শুভেন্দু। এ বার তিনি রয়েছেন বিরোধী দলনেতার আসনে। তিনিই বার বার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র দাবিতে সরব হচ্ছেন। তাই মনে করা হচ্ছে, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বিভিন্ন ক্ষেত্রের সরকারি কর্মচারীদের ‘প্রভাবিত’ করার আগেই ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দেবেন মমতা।

তবে কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক ওই প্রস্তাবিত সভাকে বিরোধী সংগঠনগুলির ‘পাল্টা সভা’ বলতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সর্ব স্তরের কমিটি ঠিক হয়ে যাওয়ার পরে আমাদের চেয়ারম্যান মানস ভূঁইয়া জানুয়ারি মাসে রাজ্য সম্মেলন করতে চান। সেই সম্মেলনে আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করছি। আশা করব, তিনি আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ওই সভায় আসবেন। এই সভার সঙ্গে বিরোধীদের কর্মচারী ইউনিয়নের আন্দোলনের কোনও যোগাযোগ নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement