মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই অনুব্রতর বৈঠক বাহিনীর সঙ্গে, অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর। প্রতীকী চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই শক্তিগড়ের রেস্তরাঁয় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। এমনটাই অভিযোগ করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ যদিও উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তাঁর দাবি, সিপিএমের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।
মঙ্গলবার সকালে কড়া পুলিশি প্রহরায় আসানসোল জেল থেকে বের করা হয় তাঁকে। জেল থেকে অনুব্রতকে কলকাতায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ। কলকাতায় আনার পথে মাঝে শক্তিগড়ের একটি রেস্তরাঁয় প্রাতরাশের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রতকে। কিন্তু সেখানেই ঘটে বিতর্কিত ঘটনা। কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেও সেই রেস্তরাঁয় তিন ব্যক্তির পৌঁছে যাওয়া এবং প্রায় আধঘণ্টা ধরে নিভৃতে তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতির সঙ্গে তাঁদের কথা বলা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রাস্তার ধারের ওই রেস্তরাঁয় তিনি ঢোকার কিছু ক্ষণ পরেই তিন ব্যক্তিকে তাঁর টেবিলে গিয়ে বসতে দেখা যায়। সবুজ পাঞ্জাবি পরা ব্যক্তি ছাড়াও বাকি যে দু’জন ছিলেন, তাঁদের এক জনের নাম তুফান মিদ্দা। তিনি অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের গাড়িচালক। তৃতীয় জনের পরনে ছিল কালো ফুল স্লিভ শার্ট। তিনি আবার বীরভুম জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা। এমন ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সুজন বলেন, ‘‘যে দোকানে বাহিনী বসে আছে, সেই দোকানেই পুলিশ নিয়ে গেল? পুলিশমন্ত্রীই বার্তা দিয়েছিলেন যে অনুব্রতকে ওখানে নিয়ে যেতে হবে। পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে অনুব্রত তাঁর বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করলেন। ফিসফিস করে কথা বললেন, এবং পুলিশ সেই বিষয়টিকে গ্রাহ্য করল, এটা বেআইনি কাজ।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, নিজে সশরীরে হাজির না হতে পারার কারণেই মুখ্যমন্ত্রী বাহিনী পাঠিয়ে নিজের বার্তা অনুব্রত পাঠিয়েছিলেন। কারণ অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে তো মুখ্যমন্ত্রীই বীরভুমের সংগঠন দেখভাল করবেন বলে জানিয়েছেন। তাই এই বেআইনী কাজ করে তিনি বার্তা আদানপ্রদান করলেন।
সিপিএম নেতার এমন মন্তব্যকে পাত্তাই দিতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নিরাপত্তায় পরিবৃত্ত হয়ে রয়েছেন, অনুব্রত। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ সবকিছু হচ্ছে। সিপিএমের এমন অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সিবিআই, ইডির মতো সংস্থাগুলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কথায় চলে। এগুলো কি সিপিএম ভুলে গিয়েছে? যে কোনও ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করা সিপিএমের পুরনো অভ্যাস।’’