গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আগামী বছর ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় বহুপ্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন। সেই জানুয়ারি মাসেই পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাগরদ্বীপে বসতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে রামমন্দিরের গুরুত্ব যেমন অপরিসীম, তেমনই মকর সংক্রান্তিতে সাগর গঙ্গার মিলনক্ষেত্রে পুণ্যস্নানও হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র বিষয়। তাই এ বার সেই মেলার আয়োজন নিয়ে বড়সড় বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৭ ডিসেম্বর, বুধবার বেলা ১২টায় নবান্ন সভাঘরে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। রাজ্য সরকারের তরফে এই বৈঠকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে রাজ্যের ১৫ জন প্রথম সারির মন্ত্রীকে। এছাড়াও ১৮টি দফতরের সচিবদের হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকেও ওই বৈঠকে যোগদানের আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে।
গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে সিংহভাগ কাজ করে থাকে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। কিন্তু মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের সব দফতরের সম্মিলীত উদ্যোগ চান। বৈঠকে তলব করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মনীশ গুপ্তকে, এ ছাড়াও বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়ছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে জেলা প্রশাসন যাতে হাতে হাত মিলিয়ে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করতে পারে সেই কারণেই জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে।
তবে এই বৈঠকের আয়োজন প্রসঙ্গে এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলার আগে প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই এই ধরনের বৈঠককে পৃথক ভাবে দেখা উচিত নয়। কিন্তু বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, বিজেপি যে ভাবে রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে সারা দেশের কাছে একটি বড় ঘটনা হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে। তার পাল্টা হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর মেলাকেও জনসমক্ষে তুলে ধরতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল। রামমন্দির উদ্বোধনের ঠিক এক সপ্তাহ আগে সাগরদ্বীপে হবে গঙ্গাসাগর মেলা। মূলত ১২-১৫ জানুয়ারি সাগরদ্বীপে লাখ লাখ মানুষ পুণ্যস্নান করতে আসবেন। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি, গঙ্গাসাগরে আগত গোটা দেশের মানুষের কাছে মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আন্তরিকতার বিষয়টিও তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য সরকার। যাতে বিজেপির মন্দির রাজনীতি এবং হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে শান দেওয়ার প্রক্রিয়াকে কিছুটা হলেও জবাব দেওয়া যায়। সেই প্রচেষ্টাতেই গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে এত বড় বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ওই দিনই বিকেলে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে নবান্নে।