মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কেবল টিভি বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নের বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ এনেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রের তরফ একটা নির্দেশ এসেছে, সেই নির্দেশে সমস্ত কেবল টিভি বন্ধ করে দিতে হবে? এতগুলো ছেলেমেয়ের কী হবে? অনেক ছোট সাংবাদিকও আছে যারা কেবল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার সত্যিই খারাপ লাগছে, অল কেবল নেটওয়ার্ক ইজ ক্লোজড। লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যাবে কোথায়? সব বন্ধ করে দিতে হবে?’’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘ওদের (বিজেপি) অনুমতি নিয়ে ওদের সিম্বল রোজ দেখাতে হবে? আমি পুজোর সময় দেখেছি কে কার সিম্বল দিয়ে কত বিজ্ঞাপন দিয়েছেন।’’
মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, ‘‘জি-২০ সম্মেলন থেকে শুরু করে পুজোর বিজ্ঞাপনে বিজেপির প্রতীক দেখানো হয়েছে বার বার।’’ তিনি নিজেও বিষয়গুলি নোট করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন মমতা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর একটি নির্দেশকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মাল্টিসিস্টেম অপারেটররা (এমএসও) যে সব স্থানীয় চ্যানেল চালাচ্ছেন সেই চ্যানেলগুলিকে ‘প্লাটফর্ম সার্ভিস’ (পিএস) চ্যানেলের আওতায় আনতে হবে। যে কারণে সেই সমস্ত চ্যানেলের রেজিস্ট্রেশন করানো বাধ্যতামূলক হবে। নির্দেশিকাতেই রেজিস্ট্রেশনের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের পোর্টালের ঠিকানা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই পোর্টালে গিয়ে এমএসও-দের স্থানীয় চ্যানেলগুলি রেজিস্ট্রেশন করালেই সেই চ্যানেলগুলি কেবল টিভির মাধ্যমে দেখানো যাবে। রেজিস্ট্রেশন না করানো হলে চ্যানেলগুলিকে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের এমন নির্দেশিকার পরেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, এই স্থানীয় চ্যানেলগুলিতে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়। এ ভাবে নির্দেশিকা জারি করে চ্যানেলগুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। নির্দেশিকার মাধ্যমে চ্যানেলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হলে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন বলেও আশঙ্কা মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রীর এমন সমর্থনকে স্বাগত জানিয়েছেন সিটি কেবলের ডিরেক্টর সুরেশ শেঠিয়া। সংযমী প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকাটি হাতে পেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী এ ভাবে আমাদের সমর্থন জানানোর জন্য তাঁকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা চালাচ্ছি।’’ তবে আইডিয়াল কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে তাপস দাস বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে কেবল টিভির উপর বড় পুঁজিপতিদের আগ্রাসন বাড়ছে। সেই আগ্রাসনে মদত রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। তাই মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবাদ জানিয়ে আমাদের মতো কেবল অপারেটর ও এমএসও-দের পাশে দাঁড়ানোয় আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’’