মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
ভোটে কারচুপি নিয়ে পরস্পরকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার ধর্মতলায় ধর্না মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে ইভিএম-এ কারচুপির অভিযোগ তোলেন মমতা। পাশাপাশি, ভোটার তালিকায় রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, প্রশাসনকে
কাজে লাগিয়ে রাজ্যে বিজেপি সমর্থকদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে ভোটার তালিকা থেকে।
মমতা এ দিন বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “ইভিএম-এ কারচুপি করা হচ্ছে।” গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বুথের এজেন্টদের কোটি-কোটি টাকা দিয়ে কিনে নেওয়া হচ্ছে। এ সব বিষয়ে নজর রাখতে হবে।” নন্দীগ্রাম আসনে শুভেন্দুর কাছেই পরাজিত হয়েছিলেন মমতা। সেখানকার ভোট-গণনা নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছিল।
এ দিকে, এই দিনই বহু বৈধ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া ও প্রশাসনিক রদবদবলে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বিধি না মানার অভিযোগ করে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ় আফতাবের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার সিইও কার্যালয়ে নাম বাদ যাওয়া ভোটারদের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন শুভেন্দু।
তাঁর অভিযোগ, এমন সমস্যার সিংহভাগ ঘটেছে ডায়মন্ড হারবার এলাকায়। সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে সিইও কার্যালয়।
ভোটার তালিকার নথি ও ভোটারদের ভোটার কার্ড দেখিয়ে শুভেন্দু বলেন, “কেউ ২৫, কেউ ৩০ বছরের ভোটার। ভোটার তালিকা থেকে কী ভাবে নাম বাদ দেওয়া হল? তাঁদের মধ্যে অনেক বিজেপি নেতা-কর্মীও রয়েছেন।” তিনি তোপ দাগেন রাজ্য প্রশাসন ও তৃণমূলের বিরুদ্ধেও। তাঁর বক্তব্য, “বিডিও-দের অনেকেই পঞ্চায়েতে চুরি করেছেন। তাঁরাই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এসডিও-দের অনেকে এই অপকর্মে যুক্ত। জেলাশাসকদের অনেকে এতে মদত দিয়েছেন। পিসি-ভাইপোর পদলেহন চলছে। এই রাজ্যে যে ধরনের সংগঠিত কারচুপি ভোটার তালিকা সংশোধনে হয়েছে, তা দেশে কোথাও হয়নি। ভোটার চুরি হয়েছে এই চোর সরকারের শাসনে।”
যদিও, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “ভোটার তালিকার সংশোধনের দিনক্ষণ প্রকাশ্যে দেওয়া থাকে। যে কেউ চাইলেই, নাম তুলতে পারেন। কারও যদি ভুল নাম থেকে যায়, সেখানে আপত্তি জানাতে পারেন। এটা পদ্ধতি মেনে হয়। এখানে তৃণমূলের কিছু করার নেই।” পরক্ষণেই তাঁর তোপ, “যাঁরা চণ্ডীগড়ের ভোট জালিয়াতি করে পুরসভায় মেয়র নির্বাচন করেন, তাঁদের মুখে বড়-বড় কথা মানায় না।”
সম্প্রতি প্রশাসন ও পুলিশে ব্যাপক রদবদল করেছে রাজ্য সরকার। তাঁর তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, “বদলি সম্পর্কিত কমিশনের বিধি ভঙ্গ করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে নির্বাচনী কার্যালয়ে তৃণমূলের লোকজনকে পাঠানো হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, “রাজ্য পুলিশের ডিজি, বীরভূমের জেলাশাসক-সহ বহু আধিকারিকের বিরুদ্ধে কমিশনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দৃষ্টান্ত আছে। কমিশনের বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাঁদের পদে রাখা হয়েছে। পুলিশ ওয়েলফেয়ার বোর্ডকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা চলছে। কমিশনকে জানাব।”