State

ঠিকানা বদলে আপত্তি, হরিশ চ্যাটার্জিতেই থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী

এখনই বাড়ি বদল করছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের এই খবর জানিয়ে বলেন, আপাতত ঠিকানা বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই মুখ্যমন্ত্রীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৬ ১৫:০৬
Share:

হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি। —ফাইল চিত্র।

এখনই বাড়ি বদল করছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের এই খবর জানিয়ে বলেন, আপাতত ঠিকানা বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই মুখ্যমন্ত্রীর। কারণ তিনি নিজেই রাজি নন।

Advertisement

৩৪বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়িতে আজন্ম বাস মমতার। ৩২ বছর আগে প্রথম বার সাংসদ হওয়া থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সদস্য বা রাজ্যের দায়িত্ব সামলানো— কোনও অবস্থাতেই ঠিকানা পরিবর্তন করেননি মমতা। দেশবিদেশের অতিথি অভ্যাগত থেকে প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী সবাইকেই তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এই টালির বাড়িতেই। কিন্তু এ বার পরিস্থিতিটা একটু আলাদা। কালীঘাটের বাড়ির টালির ছাদ যে কোনও সময় ভেঙে মাথায় পড়তে পারে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসারেরা। মাথায় টালির চাল ফুটিফাটা। নীচে থাকা কাঠের ফ্রেমে ঘুণ ধরেছে। অশক্ত দেওয়াল একবার লরির ধাক্কা খেয়ে এখনও কিছুটা বেঁকে। একটু বেশি বৃষ্টিতেই কাঠের ফ্রেম বেয়ে জল চুঁইয়ে পড়ে বিছানায়। তার উপর বেড়েছে টালি নালার ধার থেকে উঠে আসা ধেড়ে ইঁদুর আর ছুঁচোর উপদ্রব। সারা রাত ইঁদুর-ছুঁচোরা চালে উঠে দাপাদাপি করে। সব মিলিয়ে বাড়িটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতটাই নড়বড়ে, যে কোনও সময় বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে। এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাই জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁর বর্তমান বাসস্থানটি সংস্কার না করে তাঁকে সেখানে আর থাকতে দেওয়া যাবে না। শুরু হয় নবান্নের কাছাকাছি আস্তানা খোঁজার কাজ।

কিন্তু এখনই যে তিনি ঠিকানা বদলে বিশেষ আগ্রহী নয়, তা ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার সিআইআইয়ের একটি অনুষ্ঠানে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের এই খবর জানিয়ে বলেন, তাঁর বাড়ি পরিবর্তন নিয়ে যে চর্চা চলছে, তাতে তিনি ব্যথিত। এই মুহূর্তে বাড়ি পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনাই নেই তাঁর।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে বিধানচন্দ্র রায় এবং সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় আগাগোড়া তাঁদের নিজেদের বাড়িতেই থেকেছেন। প্রফুল্লচন্দ্র সেন এবং অজয় মুখোপাধ্যায়ের নিজস্ব বাসস্থান ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে জ্যোতি বসু হিন্দুস্থান পার্কে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে কিছুদিন কাটানোর পরে স্বাস্থ্যের কারণে সেই বাড়ি ছাড়েন। বাড়িটিতে তাঁর জন্য সরকার লিফটও বসিয়ে দিয়েছিল। তবে জ্যোতিবাবু শেষ অবধি হিন্দুস্থান পার্ক ছেড়ে সল্টলেকে ইন্দিরা ভবনে চলে যান। আমৃত্যু তিনি সেখানেই ছিলেন।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পাম অ্যাভিনিউ-এর দোতলার যে ছোট সরকারি ফ্ল্যাটে থাকতেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়েও সেখানেই ছিলেন। আজও সেটাই তাঁর ঠিকানা। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বারবার তাঁকে নিরাপত্তার কারণে ওই দু’কামরার ফ্ল্যাট ছাড়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের সরকারি বাড়িতে তাঁকে থাকতে বলা হয়েছিল। তিনি কোনও প্রস্তাবই কানে তোলেননি।

আরও পড়ুন:
টালির ছাদ ভেঙে পড়তে পারে মাথায়, মুখ্যমন্ত্রী আপাতত নয়া ঠিকানায়

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement