ছাতা-ধরো-হে: পার্থের সঙ্গে ছত্রধর। রয়েছেন নিয়তিও। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলে যোগ দেবেন কি-না তা নিয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন ছত্রধর মাহাতো। তবে তিনি জেল থেকে বাড়ি ফেরার পরে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম ঝাড়গ্রাম সফরেই স্ত্রী নিয়তিকে নিয়ে ২০ কিলোমিটার উজিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে গেলেন ছত্রধর মাহাতো। দু’জনের একান্তে বৈঠকও হল। বৈঠক শেষে দু’জনেই জানালেন, এ নিতান্তই পুরনো পরিচিতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ।
শনিবার বিকেলে পর্যটন দফতরের ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সের সুবর্ণরেখা স্যুইটে পার্থ-ছত্রধর একান্ত বৈঠক হয়। আর তারপরই তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
তবে কি তৃণমূলে যোগদান আসন্ন?
বৈঠক সেরে বেরিয়ে ছত্রধর অবশ্য বলেন, ‘‘পুরনো বন্ধুত্বের জায়গা থেকে পার্থদা দেখা করার জন্য ফোন করে ডেকেছিলেন। উনি জানতে চাইলেন কবে কাজ শুরু করব। আমি কিছু সময় চেয়েছি। তৃণমূলে গেলে সবাইকে জানিয়েই যাব।’’ আর পার্থ বলছেন, ‘‘যখন আন্দোলন করতে আসতাম তখন ওর সঙ্গে দেখা হত। বহুদিন পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। অনেকদিন পরে দেখা করে ভালই লাগল।’’ কী কথা হল? পার্থের জবাব, ‘‘ও তো বলল, ‘রাস্তাঘাট দেখে চিনতে পারছিলাম না কোনটা আমার বাড়ি। এত ভাল কাজ হয়েছে।’ ওর শরীর-স্বাস্থ্য কেমন আছে খোঁজ নিলাম। প্রথম দিনেই কী বলব আপনি কী চান বলুন। পরিবারের সঙ্গে ছত্রধর কিছুদিন কাটাক। আমরা তো বৃহত্তর পরিবার।’’
ইউএপি মামলায় সাজার মেয়াদ কমায় এবং বাকি মামলাগুলির কয়েকটিতে মুক্তি ও বাকিগুলিতে জামিন মেলায় ‘মুক্ত’ হয়ে ছত্রধর গত ২ ফেব্রুয়ারি লালগড়ের আমলিয়া গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। কয়েকদিন আগেই সাইকেলে লালগড় হাটে বাজার করতে এসে জনসংযোগও করেছেন একসময়ের জনসাধারণ কমিটির মুখপাত্র।
দুপুরে ঝাড়গ্রামের রবীন্দ্রপার্কে প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত জেলা ঝুমুর মেলার উদ্বোধন সেরে পার্থ চলে যান রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে। সেখানে পার্থের অপেক্ষায় ছিলেন ছত্রধর ও নিয়তি। লালগড়ের আমলিয়া গ্রাম থেকে পুলিশ পাহারায় গাড়িতে ঝাড়গ্রামে আসেন ছত্রধর। প্রায় এক ঘন্টা ছত্রধরের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন পার্থ। বৈঠক সেরে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ স্যুইট থেকে একসঙ্গে পার্থ ও ছত্রধরকে বেরোতে দেখা যায়। দু’জনেরই পরনে ছিল নীল-সাদা পাঞ্জাবী। ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে পার্থের এক নিরাপত্তা রক্ষী দু’জনের মাথায় নীল-সাদা ছাতাও ধরেন।