ধুন্ধুমার কাণ্ড সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। — নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমারকাণ্ড বাধল সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। কাউন্সিলের বৈঠক চলাকালীন কলেজে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকে। বৈঠকে উপস্থিত পড়ুয়াদের দাবি, কলেজ পড়ুয়াদের একটি অংশ ‘বহিরাগত’-দের সঙ্গে মিলে এই হামলা চালিয়েছে। এক পড়ুয়া আহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ। পড়ুয়াদের অন্য অংশের দাবি, ‘বহিরাগত’-রাই কলেজের কাউন্সিলের বৈঠকে শামিল হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগ বিজেপি এবং বাম-সমর্থক। বৈঠকে ডাক্তারি পড়ুয়া (ইউজি)-দের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়নি বলেও অভিযোগ। অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান এই অভিযোগ মানেননি। তিনি দাবি করেছেন, বৈঠকে উপস্থিত সকলেই কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়া। খবর পেয়ে মেডিক্যাল কলেজে আসে কামারহাটি থানার পুলিশ। তার পর নিয়ন্ত্রণে আনে পরিস্থিতি।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পড়ুয়াদের বৈঠক চলছিল। সেই সময় আচমকাই কলেজে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। ডিনের ঘরের দরজার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এই ঘটনায় এক ছাত্র আহত হয়েছেন বলে দাবি। অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদই ভাঙচুর করেছে। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদীরাই ছিলেন তাঁদের লক্ষ্য। তৃণমূল সমর্থক পড়ুয়ারা এই অভিযোগ মানেননি। তাঁদের পাল্টা দাবি, বৈঠকে এমবিবিএস পড়ুয়াদের এক জন মাত্র প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তিনি এআইডিএসওর সমর্থক। এ ছাড়া আর কাউকে ডাকা হয়নি বৈঠকে। এক ডাক্তারি ছাত্রের কথায়, ‘‘আমরা ইউজি পড়ুয়ায়া শিক্ষকদের শিক্ষক দিবসে মিষ্টি দিতে এসেছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি, পিজিটি, বহিরাগত, বিজেপির দালালেরা এসে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক করছেন। ইউজিদের প্রতিনিধি নেই। এক জনই ছিলেন, যিনি এআইডিএসও সক্রিয় সদস্য। ভিতর থেকে বৈঠক-কক্ষের দরজা বন্ধ করা ছিল। আমরা ঢুকতে চাইলে কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। ওয়াহিদ ইকবাল, সত্যজিৎ, কয়েক জন অধ্যাপক, যাঁরা অন্য কলেজে চলে গিয়েছেন, তাঁরা উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।’’
ওই পড়ুয়াদের আরও দাবি, জোর করে আন্দোলনের মঞ্চে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। সেখানে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সইয়ের ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। যাঁরা আন্দোলনে নামবেন না, তাঁদের নাম এইচওডির কাছে পাঠানো হবে বলেও দাবি করেছেন এক ডাক্তারি পড়ুয়া। তিনি জানিয়েছেন, বিচারের নামে ‘নোংরা রাজনীতি’ চলবে না। এর পরেই ডিনের কক্ষের বাইরে বসে পড়েন সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক-পড়ুয়াদের একাংশ। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী পড়ুয়াদের দাবি, তৃণমূল সমর্থিত পড়ুয়ারা ইচ্ছা করে এ সব করছেন।
অন্য দিকে, বকেয়া পাওনার দাবিতে সাগর দত্ত হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য সব বিভাগে কর্মবিরতির ডাকও দিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাসপাতালে পৌঁছয় কামারহাটি থানার পুলিশ।