জগদ্ধাত্রী পুজোয় মেতেছে চন্দননগর। নিজস্ব চিত্র।
আলোর শহর চন্দননগর। কিন্তু জগদ্ধাত্রী পুজোর দশমী ও একাদশীতে বিসর্জনের শোভাযাত্রার সময় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার রেওয়াজও বহু পুরনো। ফলে সবচেয়ে বড় উৎসবের সময় অন্ধকারে ডুবে থাকে চন্দননগর। এ বার সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান। শহরের বিদ্যুতের তারকে মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। খুশি সাধারণ মানুষ থেকে পুজো উদ্যোক্তারা।
জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় আলোর মালায় সেজে ওঠে চন্দননগর। বিশ্ববিখ্যাত এই শহরের খ্যাতি তার অসামান্য আলোক শিল্পের জন্যও। শহরের সবচেয়ে বড় উৎসব, জগদ্ধাত্রী পুজোয় সেই আলোর রোশনাই দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে ভিড় করেন বহু মানুষ। নজর কাড়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রা। কিন্তু দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বিসর্জনের শোভাযাত্রার আগে শহরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। অন্ধকারে ডুবে যায় আলোকশিল্পের আঁতুড়ঘর। এ বার তাতে ইতি।
কয়েক দিন আগে রবীন্দ্র ভবনের প্রশাসনিক বৈঠকে আভাস দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, চন্দননগর শহরে মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বিদ্যুতের তার। এর ফলে বিসর্জনের শোভাযাত্রার জন্য শহরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে না।
পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘‘চন্দননগরে বহু দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন। আলোর শহর হিসাবে জগৎজোড়া খ্যাতি চন্দননগরের। জগদ্ধাত্রী পুজোয় সেই আলোর শহর অন্ধকার হয়ে যায়। ২০১৬ সালে নির্বাচনে জয় লাভের পর থেকেই, এটা নিয়ে কী করা যায় ভাবছিলাম। অবশেষে সমস্যার সমাধান হচ্ছে। ২০২১ এর পর চন্দননগরে আর অন্ধকার ঠাঁই নেই।’’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘বহু পুরনো শহর চন্দননগরে বহু দিন ধরেই উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার রয়েছে। শোভাযাত্রার জন্য তার কেটে দিতে হয়। ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে চন্দননগর। পানীয় জলেরও সমস্যায় পড়েন শহরবাসী। মাটির তলা দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে গেলে সেই সমস্যা আর থাকবে না। এর পর থেকে আলোর শহরে বিসর্জনের শোভাযাত্রাও হবে আলো জ্বালিয়ে।’’ মন্ত্রী জানিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু হয়ে যাবে। সে জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ।
সরকারি উদ্যোগে খুশি চন্দননগরের পুজো উদ্যোক্তারা। কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সভাপতি শুভজিৎ সাউ বলেন, ‘‘দশমী ও একাদশীর দিন শহরবাসীর খুব অসুবিধা হত। বিশেষ করে পানীয় জলে। আগামী বছর আরও ভাল করে পুজো করতে পারব।’’ বিবিরহাট উত্তরাঞ্চল জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সম্পাদক মোহিত নন্দী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী দেখতে এসে কিছু না কিছু উপহার দিয়ে যান। এ বারও তাই হল। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া উপহারে আমরা অত্যন্ত খুশি।’’