অভিজিৎ সেনকে নিয়ে পাড়ায় কর্মী-সমর্থকরা। নিজস্ব চিত্র
নামে তিনি ‘হাঁদা’ হতে পারেন। কিন্তু চন্দননগর পুরসভায় বামেদের মান রাখলেন তিনিই।
সার্বিক ভাবে পুরভোটে বামেরা বিধানসভা ভোটের নিরিখে ভাল ফল করলেও তাদের মাত্র একজন প্রার্থীই জিতেছেন। বাম সদস্য হিসেবে এ বার পুরসভায় যাচ্ছেন চন্দননগরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী সিপিএম প্রার্থী অভিজিৎ সেন ওরফে হাঁদা। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের সমীর গুহ মল্লিক ওরফে কালুয়াকে ১২৩ ভোটে হারিয়েছেন তিনি।
ওই ওয়ার্ডের রথের সড়ক এলাকায় হাঁদাকে সবাই এক ডাকে চেনেন। পেশায় পার্শ্বশিক্ষক। কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের এই প্রাক্তনী স্থানীয় সাধুচরণ স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যাপীঠে সেই ২০০৭ সাল থেকে চাকরি করছেন। বাবা দুলাল সেন ট্রলি ভ্যান চালাতেন। ২০০৮ সাল থেকেই তিনি অসুস্থ। রথের সড়কে ভাড়াবাড়ির বাসিন্দা হাঁদাই তখন সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন।
অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমাকে ভাল নামে কেউ সে ভাবে এখানে চেনেন না। পাড়ার মানুষ হাঁদা নামেই চেনেন। প্রাইভেট টিউশন আর শিক্ষকতার সামান্য আয়ে কোনওক্রমে মা-বাবাকে নিয়ে চলে যায়। কোনও সমস্যায় পড়লে মামার বাড়িই ভরসা।’’ জেতার রসায়নটা কী? অভিজিতের কথায়, ‘‘সারা বছর মানুষের পাশে থাকি।’’
গত বার এই পুরসভায় বামেরা ৯টি আসনে জিতেছিল। এ বার একটিতে। তবে, গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের চেয়ে এ বার বামেদের ভোট বেড়েছে। বিজেপিকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে তারা। এ ছাড়াও, মোট চারটি ওয়ার্ডে বামেদের হারিয়ে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান সামান্য ভোটে।
৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী রেখা তিওয়ারি মাত্র ১২ ভোটে হেরে গিয়েছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী শিপ্রা দে হেরেছেন ৪৩ ভোটে। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী ধীরেন সাহা ১৫৪ ভোটে পরাজিত হন। ১৪ নম্বর থেকে ঐকতান দাশগুপ্ত মাত্র ৫৫ ভোটে হেরেছেন।
ঐকতান বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের পর মাত্র ৬ মাস সময় পেয়েছি আমরা। বিধানসভা ভোটে পুরসভার প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই আমরা বিজেপির থেকে ভোট শতাংশে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলাম। এই সময়ের ব্যবধানে বামেদের ভোট যে ভাবে বেড়েছে তাতে আমরা আশাবাদী।’’